গরু-ছাগল নয়, নোটিস হাসপাতালে

টনক নড়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল চত্বরে গরু, ছাগল, শুয়োর, মুরগির যাতায়াত ঠেকাতে রীতিমতো নোটিস জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে মাইকে প্রচার ও লিফলেট বিলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ০৭:১০
Share:

অবাধ: বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল যেন চারণভূমি। ইনসেটে কর্তৃপক্ষের ঝোলানো নোটিস। নিজস্ব চিত্র

স্বাস্থ্য দফতরের পরিচ্ছন্নতার পরীক্ষায় নম্বর কম মিলেছে। আর তাতেই টনক নড়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল চত্বরে গরু, ছাগল, শুয়োর, মুরগির যাতায়াত ঠেকাতে রীতিমতো নোটিস জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে মাইকে প্রচার ও লিফলেট বিলি। সবেতেই কর্তৃপক্ষের বার্তা— ‘হাসপাতাল চত্বরে গরু, ছাগল, শুয়োর, মুরগি ঢুকলে ওই সব গবাদিপশুর মালিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’

Advertisement

বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের আশপাশে রয়েছে খেটেখাওয়া মানুষজনের বসতি। তাঁদের অনেকের বাড়িতেই রয়েছে গরু, ছাগল, মুরগি। একাংশ এলাকাবাসী আবার শুয়োরও পোষেন। হাসপাতালের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘাসপাতার অভাব নেই। ফলে, গরু-ছাগলদের পোয়াবারো। তার উপর ডাস্টবিনে রোগীদের উচ্ছিষ্ট খাবারদাবারের টানে শুয়োর, মুরগিদের আনাগোনা লেগেই থাকে। অভিযোগ, কিছু বাসিন্দা ইচ্ছে করে গরু-ছাগল হাসপাতাল চত্বরে ছেড়ে দিয়ে চলে যান। অনেক সময় প্রাণীগুলি হাসপাতালের বারান্দায় ঢুকে পড়ে। এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৬০টি। তবে প্রতিদিন দ্বিগুণ রোগীর চাপ থাকে। অস্বস্তিকর পরিবেশ নিয়ে তিতিবিরক্ত রোগীরাও।

সরকারি হাসপাতালগুলির পরিবেশ-পরিচ্ছন্নতার নিরিখে ‘কায়াকল্প’ পুরস্কার চালু করেছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন। কয়েক মাস আগে এই প্রকল্পের আধিকারিকরা বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন। চত্বরে গরু-ছাগল-শুয়োর অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখে অবাক হন তাঁরা। পরিচ্ছন্নতার পরীক্ষাতেও খুবই কম নম্বর পেয়ে মুখ পুড়েছে এই হাসপাতালের। তারপরই গবাদি পশুর আনাগোনা ঠেকাতে তৎপর হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেলপাহাড়ির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উত্তম মাণ্ডি বলেন, “নিষেধাজ্ঞা-প্রচারের ফলে গত দু’দিনে গরু-ছাগলের উৎপাত কিছুটা কমেছে।’’

Advertisement

ঝাড়গ্রাম জেলা-সহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে দরজা খোলা থাকলেও প্রবেশ পথে ‘ক্যাটল ক্যাচার’ বসানো আছে। ফলে, গরু-ছাগল সহজে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকতে পারে না। কিন্তু বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ঢোকার মূল দরজা সব সময় খোলা থাকে। ‘ক্যাটল কাচার পাথ’-ও নেই। ফলে, শুধু নোটিস আর প্রচারে কতটা লাভ হবে, সে প্রশ্ন উঠছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উত্তমবাবু অবশ্য বলেন, “প্রবেশপথে ক্যাটল ক্যাচার লাগানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।” আর ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝির বক্তব্য, “এলাকাবাসীকে বুঝতে হবে হাসপাতাল চত্বর চারণভূমি নয়।
গরু-ছাগল যাতে অবাধে ঢুকতে না পারে, সে জন্য বিশেষ পথও তৈরি করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন