ঝাড়গ্রামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
চেষ্টা চলছিল লাগাতার। শেষপর্যন্ত কি আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের রক্ষণে ফাটল ধরল!
বৃহস্পতিবার লোধাশুলিতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শাসক দলে যোগ দিলেন মঞ্জুশ্রী মুর্মু, চানমণি মুর্মু ও গোপীনাথ সরেন। তিনজনই আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের হয়ে কাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছিলেন। তৃণমূলের জেলা নেতাদের দাবি, এই দল বদলের ফলে কাঁকো তাদের দখলে আসবে। এই পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৩টি। তৃণমূল চারটি, আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ চারটি, বিজেপি একটি, তৃণমূলের চারজন বিক্ষুব্ধ প্রার্থী নির্দল হয়ে জেতেন।
এ দিন আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের তিনজন ছা়ড়াও, বিজেপির জন প্রতিনিধি, বিক্ষুদ্ধ তৃণমূলের দু’জন শাসক দলে যোগ দিয়েছেন। পার্থবাবুর দাবি, ‘‘আমরা দলে যোগ দেওয়ানোর উপর জোর দিচ্ছি না। যাঁদের ভুল বোঝানো হয়েছিল, তাঁদের কাছে টেনে নেওয়ার ব্যাপারে জোর দিচ্ছি।” এই দলত্যাগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নেতা বাবলু মুর্মুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।
এ দিন লোধাশুলির পথসাথীতে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে এসেছিলেন পার্থবাবু। সেখানেই হয় তৃণমূলে যোগদান পর্ব। অজয় সেন, সুশীল ঘোষের মতো প্রথম সারির বেশ কয়েক জন জেলা নেতা সহ ষাট জন বিজেপি নেতা-কর্মীও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার পাঁচ জন মণ্ডল সভাপতি আছেন। যোগদানকারী প্রাক্তন বিজেপি নেতাদের কোর কমিটিতে রাখা হচ্ছে বলে জানান পার্থবাবু। পরে তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থীরা ওদের সঙ্গে আছে কিনা সে ব্যাপারেই ওরা নিশ্চিত হতে পারছে না। তাই অন্য রাজ্যে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে।” পার্থবাবু জানান, এঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে বলেছেন তিনি।
৯ অগস্ট আদিবাসী দিবস উপলক্ষে ঝা়ড়গ্রামে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দলের কর্মীদের পতাকা ছাড়া সভাস্থল ভরানোর নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব। ওই দিনই ঝাড়গ্রামে পাল্টা সমাবেশের ডাক দিয়েছে আদিবাসী সংগঠনভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দুর্গাপুজো বড়ও হয়, আবার ছোটও হয়। তেমনই দেখতে হবে যাঁরা ওই কর্মসূচি করছেন, তাঁদের সম্প্রদায়ের ভাল করবার ইচ্ছে কতটা আছে।”
জঙ্গলমহলের পথে পায়ে পায়ে কাঁকর বিছানো। দখলে আসতে চলেছে কাঁকো। তারপর...