বিদায়: কংসাবতীতে ভাসান।
দিন কয়েক আগেই গড়বেতার গনগনিতে বিশ্বকর্মা বিসর্জন দিতে গিয়ে শিলাবতীতে তলিয়ে গিয়েছিলেন দুই যুবক। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে তাই দেখা গেল বাড়তি তৎপরতা। রবিবার মেদিনীপুরে কোনও দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হয়নি। তবে শনিবার বিসর্জনের সময় শহরের কংসাবতী ঘাটে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। রাখা হয়েছিল ক্রেন। ক্রেনের সাহায্যেই প্রতিমা বিসর্জন চলছে। নদীতে জলস্তর বেড়েছে। ঘাট পর্যন্ত চলে এসেছে জল। তাই নদীতে কাউকে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। বাড়তি পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। মেদিনীপুরের এক পুরকর্তার কথায়, “এ বার নদীতে জল রয়েছে। তাই বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। পুজো উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থেই ক্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
কংসাবতী বৃষ্টির জলে পুষ্ট। মাস খানেক আগেই মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হয়। তখন নদীতে জল বাড়ে। পুজোর ক’দিনও মেদিনীপুরে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। মেদিনীপুর শহরের অধিকাংশ প্রতিমাই কংসাবতীতে বিসর্জন হয়। এ জন্য পুরসভা সব রকম ব্যবস্থা করে। এ বারও করা হয়েছে। গাঁধীঘাটে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিবির করে পুরকর্মীরা রয়েছেন। ঘাটটি শক্তপোক্ত করে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধানো হয়েছে। বছর দুয়েক আগে নদীতে খুব কম জল ছিল। সে বার বিসর্জনে বেশ সমস্যা হয়েছিল। তখন ঘাটের পাশে মাটি খুঁড়ে জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। এ বার সেই সমস্যা নেই। শুরুতে ক্রেন দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছে। পরে কাঠামো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বিসর্জন ঘিরে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে শনিবার বিকেল থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মক্কর। প্রতি বছরের মতো এ বছরও শহরের গোলকুয়াচকে পুরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ী অফিস খোলা হয়েছে। শহরের বেশির ভাগ পুজো কমিটি এই এলাকার উপর দিয়েই বিসর্জনের শোভাযাত্রা নিয়ে যায়। গোলকুয়াচক ও তার আশেপাশের এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সিঁদুর খেলা, মিষ্টি মুখ শেষে দশমীর বিকেল থেকেই শুরু হয় বিসর্জন। সন্ধ্যা নামতেই বিসর্জনের শোভাযাত্রা গোলকুয়াচকের উপর দিয়ে যেতে শুরু করে। শোভাযাত্রা দেখতে প্রচুর মানুষও রাস্তার দু’ধারে ভিড় করেন। পুজো নির্বিঘ্নে কেটেছে। পুলিশ- প্রশাসনের আশা, বিসর্জনও নির্বিঘ্নে কাটবে। মেদিনীপুর শহর এবং শহরতলিতে শতাধিক দুর্গাপুজো হয়। দশমীর দিন খুব বেশি বিসর্জন হয়নি। বেশির ভাগ প্রতিমা বিসর্জন হবে আজ, সোমবার।