তাণ্ডব: হাতির হানায় ভেঙেছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
হাতির হানায় ক্ষতি হল বাড়ির। দাঁতালের তাণ্ডবে মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়ায় ফসলেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার রাতে এই এলাকায় ঢুকে পড়ে হাতির দল। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “হাতির দল ওই এলাকায় রয়েছে। সব কিছুর উপরে নজর রাখা হয়েছে।”
দলটিতে প্রায় ১২- ১৪টি হাতি রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এখন বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। জমির উপর দিয়ে যাতায়াতের ফলে সেই বীজতলা নষ্ট করছে হাতির দল। ফলে, চাষিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, বন দফতর হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছে না। তাই ক্ষতির বহর বাড়ছে। বন দফতর অবশ্য জানিয়েছে, এই এলাকা থেকে হাতি তাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মেদিনীপুর গ্রামীণের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে হাতি। হাতির হানায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
গত বুধবার রাতে গোপগড়ের জামশোলে হাতির হানায় মারা যান ভূপেন মাঝি। বছর বাহান্নর ভূপেন স্ত্রী সুফলাদেবীর সঙ্গে বাড়ির সামনে বসেছিলেন। জঙ্গল ছেড়ে অতর্কিতে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে একটি হাতি। প্রথমে ভূপেনের উপর হামলা চালায়। পরে সুফলার উপর। ভূপেনকে শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। সুফলা কোনও ভাবে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান।
এর আগে মেদিনীপুর গ্রামীণের নয়াগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়েছে হাতি। শুক্রবার রাতে হাতির দল হানা দেয় চাঁদড়ায়। সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চাঁদড়া রেঞ্জের সারেঙ্গাশোলে। এখন ৭-৮টি বাড়ি ভাঙচুর করেছে হাতির দল। ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে তৈরি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে দলটি।
লক্ষ্মীরাম কিস্কু, মনসা হেমব্রম, জয়রাম কিস্কু, দিপালী মাহাতো, সুনীল মাহাতো প্রমুখ গ্রামবাসীর বক্তব্য, অতর্কিতে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতির দল। গ্রামের সকলেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। মূলত, খাবারের খোঁজেই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতি। সাবাড় করে জমির ধান। যত দিন যাচ্ছে, হাতির দল ততই নতুন নতুন এলাকা বাড়িয়ে নিচ্ছে। মেদিনীপুরের এক বনকর্তা মানছেন, “হাতিকে জঙ্গলের সীমানার মধ্যে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সমস্যা হচ্ছে। হাতিকে আটকে রাখতে হলে খাবারের প্রয়োজন।’’