ভাঙল পুলিশ ক্যাম্প, ঘরমুখো পর্যটকেরা 

আবহাওয়া দফতরের নতুন পূর্বাভাস অনুসারে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ‘ফণী’ পূর্ব মেদিনীপুরের প্রবেশ করবে। তবে এ দিন সকালে দিঘায় শুরু হয়েছিল ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টি। তবে তা একটানা থাকেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০১:০৯
Share:

ঝড়ের দাপটে দিঘার সৈকতে পুলিশ কিয়স্কের হাল। শুক্রবার নিজস্ব চিত্র

ওড়িশা উপকূলে তখন শুরু হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র দাপট। খানিকটা তার আঁচ পড়ল পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকা দিঘা, মন্দারমণিতে।

Advertisement

আবহাওয়া দফতরের নতুন পূর্বাভাস অনুসারে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ‘ফণী’ পূর্ব মেদিনীপুরের প্রবেশ করবে। তবে এ দিন সকালে দিঘায় শুরু হয়েছিল ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টি। তবে তা একটানা থাকেনি। মাঝে মাঝেই কমেছে এবং থেমেছে। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত হওয়া ওই দমকা হাওয়াতেই ভাঙল বাড়ি। ক্ষণিকাঘাটের কাছে উড়ে গেল পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের ছাউনি।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ‘ফণী’র তাণ্ডবের কথা আগাম আঁচ করে পর্যটকদের দিঘা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই দিঘা উপকূলে সে নিয়ে মাইকে প্রচার করা হয়। ফলে শুক্রবার সকাল থেকেই পর্যটকদের মধ্যে বাড়ি ফেরার ধুম পড়ে যায়। দিঘা রেল স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে লম্বা লাইন পড়ে যায়। এ দিন সকাল ৫টা ৪০ মিনিটে সাঁতরাগাছি লোকাল, সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে পাঁশকুড়া লোকাল এবং সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস দিঘা স্টেশন থেকে ছাড়ে। অন্য ট্রেন বাতিল হওয়ায় ওই তিনটি ট্রেনে বাড়িমুখী পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছিল। সড়কপথেও চিত্রটা ছিল একই। এ দিন বেশ কয়েকটি সরকারি বাস সকালে দিঘা থেকে ছাড়ে। কার্যত পর্যটক শূন্য এ দিন দিঘার সৈকত ছিল একেবারে সুনসান। ফলে সৈকতে নুলিয়া এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলের প্রতিনিধিদের তেমন বেগ পেতে হয়নি।

Advertisement

রামনগর-১ এবং ২ ব্লকের উপকূলবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের জন্য বৃহস্পতিবারই খোলা হয়েছিল এলাকার ত্রাণশিবিরগুলি। এ দিন রামনগর-২ ব্লকের চেওয়াশুলি ফ্লাড সেন্টারে আশপাশের ৪০টি পরিবারকে নিয়ে আসা হয়। যাঁদের কাঁচা বাড়ি রয়েছে, তাঁদেরই মূলত এই ফ্লাড সেন্টারে রাখা হচ্ছে। রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি অঞ্চলে ও গ্রামে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে। ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সে’র সদ্যেরা বিভিন্ন পরিবারের বয়স্ক লোকেদের রীতিমত দোলায় চাপিয়ে উদ্ধার করেন। শুধু উপকূল এলাকার বাসিন্দারা নয়, তাঁদের সঙ্গে গবাদি পশুদেরও ফ্লাড সেন্টারে রাখা হয়েছে। জামড়া শ্যামপুরের বাসিন্দা শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘সমুদ্রের লাগোয়া এলাকায় আমাদের কাঁচা বাড়ি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাইক্লোন সেন্টারে আসার কথা বলা হয়েছিল। ফলে আমরা গবাদি পশু নিয়ে সাইক্লোন সেন্টারে চলে এসেছি।’’

এ দিন রামনগর-১ ব্লক সভাপতি শম্পা মহাপাত্রের নেতৃত্বে একটি রেসকিউ দল চাঁদপুর, শঙ্করপুরে যান। সেখানে দুর্বল সমুদ্র বাঁধ পরিদর্শনের পর কিছু জায়গায় জল নিকাশির জন্য মাটি কাটা হয়। তারপর তাঁরা যান গোবিন্দবসান গ্রামে। সেই গ্রামও খালি করা হয়।

জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ফণীর জন্য সারা জেলায় মোট ৬১টি শিবির খোলা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সেগুলিতে প্রায় ২২ হাজার ১৮৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন