বাঁধ ভেঙে প্লাবনের শঙ্কা মায়াচরে

হলদিয়ার মহকুমা শাসক পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘মহিষাদল ব্লকের মায়াচরের অবস্থা উদ্বেগজনক। বিডিওকে সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৪:৩৭
Share:

ভাঙনের-গ্রাসে: মায়াচরে বসতি। নিজস্ব চিত্র।

টানা বৃষ্টির জেরে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে রূপনারায়ণ নদের। তার উপর ভরা কোটালে কয়েক জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্লাবনের আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছে হলদিয়া মহকুমার মহিষাদল ব্লকের মায়াচর।

Advertisement

মহিষাদল বিডিও অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়াচরের পূর্ব দিকে সামন্তপাড়ার কাছে নদী বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে এলাকায়। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে স্থানীয় মানুষই বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন। হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তিলক চক্রবর্তী জানান, বাঁধ দিয়ে জল আটকানো ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। না হলে গোটা মায়াচর জলমগ্ন হয়ে য়াওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মায়াচরের বাসিন্দা মধুসূদন গুছাইত জানান, সারা রাত আতঙ্কে কাটছে। মায়াচরের পূর্বদিকের সামন্ত পাড়ার ৫টি বাড়ি ধসে গিয়েছে। পূর্ব দিকের ৫০০ মিটার এলাকায় বাঁধের কার্যত কোনও অস্তিত্ব নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এখনই প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নিলে ২ কিলোমিটার এলাকায় জল ঢুকে আসতে পারে। বাসিন্দাদের ওই সব এলাকা থেকে সরে যেতে মাইকে প্রচার করে সতর্ক করা হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

হলদিয়ার মহকুমা শাসক পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘মহিষাদল ব্লকের মায়াচরের অবস্থা উদ্বেগজনক। বিডিওকে সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত বাঁধ মেরামতির কাজ করলেও তাদের প্রযুক্তিগত সাহায্য দেওয়ার জন্য সেচ দফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়াচর হাইস্কুলে তৈরি ত্রাণ শিবিরে জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে আসা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা রবীন্দ্র সামন্ত, রাজেন্দ্র সামন্তর কথায়, ‘‘আগেই ঘর-বাড়ি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। এখন কোনরকমে টিকে আছি। এরপর বাঁধ ভেঙে গেলে গরু-বাছুর নিয়ে যাবো কোথায় ভেবে কুল পাচ্ছি না।’’

মায়াচরের পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের মধুমিতা দলুই বলেন, ‘‘পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রতিদিন নদী বাঁধ ভাঙছে। প্রশাসনের উদ্যোগ ছাড়া ভাঙন আটকানো সম্ভব নয়। নদী গর্ভে বাড়ি ঘর চলে যাওয়া মানুষদের পঞ্চায়েত থেকে সাহায্য করা হচ্ছে।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বাঁধে ভাঙন দেখা দিলেও কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আগে যেখানে মায়াচর আড়াই কিলোমিটার চওড়া ছিল, এখন তা কমে দেড় কিলোমিটারে ঠেকেছে।

তমলুকের সাংসদ দিবেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘মায়াচরের ভাঙন নিয়ে খোঁজ নিয়েছি। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেচ দফতরকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন