রামনগর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র
লম্বা প্ল্যাটফর্মের ইতিউতি ভেঙে গিয়েছে মেঝে। কোথাও গর্ত। অসতর্ক হলেই পড়ে গিয়ে জখমের আশঙ্কা। নড়বড়ে ওভারব্রিজে হাঁটলে লোহালক্কড়ের ঝমঝম শব্দ হয়। আলোর ব্যবস্থাও খারাপ। আধো অন্ধকারেই চলে ট্রেনে যাত্রীদের ওঠানামা। দিঘা-তমলুক রেলপথে গুরুত্বপূর্ণ কাঁথি, রামনগর, সুজালপুর স্টেশনের এমন অবস্থা দীর্ঘ দিনের, যা নিয়ে সরব হয়েছেন যাত্রীরা।
এই রেলপথে যাত্রীদের চাপ যথেষ্ট। দিঘার পর্যটকরাই ছাড়াও বহু নিত্যযাত্রীরও যাতায়াত রয়েছে। দিন দশেক আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে রামনগর স্টেশনের অবস্থা সম্পর্কে জানান কাঁথির বাসিন্দা কৌশিক পাল। তাঁর অভিযোগ, “রামনগর স্টেশনের ওভারব্রিজের বেসমেন্টে পর্যাপ্ত মাটি নেই। ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। প্ল্যাটফর্মে বহু জায়গায় মেঝের নীচের মাটি বসে যাওয়ায় ফ্লোর টাইলস উঠে গিয়েছে। গর্ত তৈরি হওয়ায় বিপদের আশঙ্কা। অসতর্ক হলেই পড়ে গিয়ে চোট লাগতে পারে।” এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই ফেলে দেওয়ার পর সোমবার কৌশিকবাবুর দাবি, “খোঁজ নিয়ে দেখলাম কয়েক দিন আগে ওভারব্রিজের নীচের ভাঙা ও ফাঁপা অংশ মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু বাকি স্টেশনের দশা একই।” যদিও এই অংশটি সারানো বিষয়ে রেলের তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি এখনও পর্যন্ত, জানান কৌশিকবাবু।
এগরা-১ ব্লকের বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা অনুপম দে প্রায়ই রামনগর স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। তাঁর অভিযোগ, “স্টেশনে শুধুমাত্র এই রেলপথের ম্যানুয়াল টিকিট পাওয়া যায়। অৰ্থাৎ রামনগর থেকে নৈহাটি যেতে হলে হাওড়ায় নেমে ফের টিকিট কাটতে হয়।” তাঁর আরও অভিযোগ, স্টেশনে যাত্রীদের জন্য ছাউনি নেই। সুজালপুর স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করা এক নিত্যযাত্রীর কথায়, “যাত্রীদের বসার জন্য দু’টি কাঠের চেয়ার আছে। দু’টিরই পাটাতন ভাঙা। লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে আলো নেই।” কাঁথির আঠিলাগড়ির বোধিসত্ত্ব জানাকে রোজ ওঠানামা করতে হয় কাঁথি স্টেশনে। তিনি বলেন, “স্টেশনের শৌচাগার নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। পুরুষ ও মহিলা শৌচাগারের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা যায় না।” স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের অনেক জায়গা ভাঙা বলে জানান কৌশিকবাবু। তাঁর দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কাঁথি, রামনগর স্টেশনের বিষয়ে জেনে খড়্গপুর ডিভিশনের ডিআরএম কে রবিনকুমার রেড্ডিকে বিষয়টি দেখতে বলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তবে এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কে রবিনকুমার রেড্ডি ও সিনিয়ার ডি সি এম কুলদীপ তিওয়ারির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।