পুলিশি ‘নজরদারি’র অভাবে বেআইনি কারবার

রান্নার গ্যাসে স্কুলের গাড়ি, বাড়ছে বিপদ

রান্নার গ্যাসের সাধারণ গ্রাহকেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রকাশ্যে রাস্তার উপর দোকানে বেআইনি গ্যাস ভরা হলেও নির্বিকার প্রশাসন। 

Advertisement

গোপাল পাত্র

এগরা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে গাড়িতে ভরা হচ্ছে গ্যাস। নিজস্ব চিত্র

হেঁশেলের রান্নার গ্যাস সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে চোরা কারবারিদের হাতে। শুধু তাই নয়, সিলিন্ডার থেকে সেই গ্যাস চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে পুলকার মালিকদের। এমনই অভিযোগ তুলেছেন রান্নার গ্যাসের সাধারণ গ্রাহকেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রকাশ্যে রাস্তার উপর দোকানে বেআইনি গ্যাস ভরা হলেও নির্বিকার প্রশাসন।

Advertisement

অর্থনৈতিক কারণে গ্রামীণ এলাকায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ শতাংশের হারে শহরের তুলনায় অনেকটাই কম। মধ্যবিত্ত অনেক কৃষক পরিবার এই পরিষেবা নিলেও তাঁদের সিংহভাগ প্রতি মাসেই সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন না। অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোনও কোনও পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের কিছু সিলিন্ডার বিনামূল্যে পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্যাস সংযোগের বই নিয়ে নেয়। সেই বই থেকে গ্যাস বুকিং করে নিজেদের কারবারে ব্যবহার করছে তারা। ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে একটি ভর্তুকি যুক্ত এলপিজি সিলিন্ডার যেখানে ৮০০ টাকায় এখন মিলছে, সেই সিলিন্ডার অসাধু ব্যবসায়ীরা কালো বাজারে প্রায় ১৩০০ টাকায় বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এলাকার এক শ্রেণির পুলকার মালিকদের সঙ্গে বোঝাপোড়ায় এগরা মহকুমায় রমরমিয়ে চলছে গ্যাসের কালোবাজারি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রলের সঙ্গে গ্যাসও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় অনেক পুলকারে। পেট্রলের থেকে জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার বেশি লাভজনক হওয়ায় অনেকে পুলকারেই গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা নেওয়া হচ্ছে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে, যা একেবারেই বেআইনি। এর ফলে মহকুমার বিভিন্ন রাস্তার পাশে দোকানে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে পুলকারগুলিতে গ্যাস ভরার বেআইনি কারবার গজিয়ে উঠেছে। বেআইনির পাশাপাশি এই ধরনের ফিলিং সেন্টার থেকে যে কোনও বড় ধরনের বিপদ ঘটে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকে।

Advertisement

অভিযোগ, পটাশপুর, এগরা কিংবা ভগবানপুরের একাধিক জায়গায় এই ধরনের গোপন ফিলিং স্টেশন করে ব্যবসা চালাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। ওই সব দোকানে মোটর চালিত পাম্পের সাহায্যে একটি এলপিজি সিলিন্ডার থেকে পুলকারে গ্যাস ভর্তি করা হচ্ছে। এক কিলোগ্রাম খুচরো গ্যাস বিক্রি করলে দিতে হচ্ছে ৯০ টাকা। এই বিষয়ে শঙ্কর জানা নামে এক পুলকার চালকের দাবি, ‘‘বেশি দাম নিলেও রান্নার গ্যাসে অনেক বেশি রাস্তা অতিক্রম করা যায়। তা ছাড়া আমাদের এই এলাকায় সরকারি অনুমোদিত কোনও গ্যাসের ফিলিং সেন্টার না থাকায় অনেকে বাধ্য হয়েই এই রাস্তায় ঝুঁকছেন।’’

এগরা মহকুমার পুলিশ আধিকারিক সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রান্নার গ্যাস পুলকারে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যেখানে এই ধরনের বেআইনি গ্যাস ফিলিং করা হচ্ছে শীঘ্রই পুলিশি অভিযান চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন