নেকড়ের হানার পর মিলল দেহ

বাবুই দড়ি পাকাচ্ছিলেন এক মহিলা। উঠোনে খেলছিল তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে। হঠাৎই নেকড়ের হানা। প্রথমে মাকে। পরে ছেলেকে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২৭
Share:

মৃত নেকড়ে। নিজস্ব চিত্র

বাবুই দড়ি পাকাচ্ছিলেন এক মহিলা। উঠোনে খেলছিল তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে। হঠাৎই নেকড়ের হানা। প্রথমে মাকে। পরে ছেলেকে।

Advertisement

শুধু নয়াগ্রামের নিমাইনগরের মা ও ছেলে নয়। সোমবার অসুস্থ এক নেকড়ের হামলায় আহত হয়েছে দুই শিশু-সহ ১৬ জন গ্রামবাসী। কিছুক্ষণ পরে জঙ্গল রাস্তার ধারে নেকড়েটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্থানীয় অভিযোগ, নেকড়েটিকে পিটিয়ে মেরেছেন গ্রামবাসীরা। যদিও পিটিয়ে মারার অভিযোগ স্বীকার করেনি বন দফতর। খড়্গপুরের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, “নেকড়েটি অসুস্থ ছিল। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে কয়েকজন গ্রামবাসীকে কামড়ে দেয়। জঙ্গল রাস্তার ধারে জামশোলায় নেকড়েটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নেকড়েটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।”

এ দিন সকাল ১১টা থেকে তিনঘণ্টা ধরে নয়াগ্রাম ব্লকের পর পর ছ’টি গ্রামে ঢুকে বাসিন্দাদের উপর হামলা চালায় নেকড়েটি। আহতদের মধ্যে দুই শিশু সহ ৮ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। নেকড়েটির দেহ খড়্গপুরের হিজলিতে নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত করানো হয়।

Advertisement

কেন এ ভাবে পরপর হামলা? বনকর্মীরা বলছেন, নেকড়েটি অসুস্থ ছিল। শরীরের সব লোম উঠে গিয়েছিল। সম্ভবত, অসুস্থতাজনিত কারণেই এ ভাবে হামলা বলে অনুমান বনকর্মীদের। প্রথমে কালুয়াষাঁড়ের জঙ্গল লাগোয়া নিমাইনগরে রানি সরেনের বাড়িতে হানা দেয় নেকড়েটি। হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রানি জানালেন, তিনি ঘরে বাবুই দড়ি পাকাচ্ছিলেন। হঠাৎই জঙ্গলের দিক থেকে এসে নেকড়েটি তাঁর ডান হাত কামড়ে ধরে। তাঁর কথায়, ‘‘ ছাড়াতে গেলে জোরে কামড়ে মাংস তুলে নেয়। ছেলের মুখেও কামড়ে দেয় নেকড়েটি।’’ এরপর নেকড়েটি খাসজঙ্গল গ্রামে হানা দিয়ে সেখানেও কয়েকজন গ্রামবাসীকে জখম করার পরে তাড়া খেয়ে কমলাটোটা, রাঙ্গিয়াম, রাইশোল, চুনপাড়া ও কোপ্তিভোল গ্রামে ঢুকে পড়ে। রাইশোলের সুরেন্দ্র মাহাতো দাঁড়িয়ে নিজের ভাগ্নে দিলীপ মাহাতোর সঙ্গে গল্প করছিলেন। নেকড়েটি সুরেন্দ্রবাবাবুর ডান হাতের অনামিকার আঙুল কামড়ে খেয়ে নেয়। দিলীপবাবুকেও জখম করে। চিরিপিটি গ্রামের বছর পাঁচেকের শিশু গৌতম সরেনকেও কামড়ে দেয় নেকড়েটি।

হাসপাতাল আহতদের দেখতে যান নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী সঞ্চিতা ঘোষ ও তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত। সঞ্চিতাদেবী বলেন, “যাতে আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় সেজন্য জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। এদিন আক্রান্ত গ্রামবাসীর প্রতিরোধে নেকড়েটির মৃত্যু হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন