প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। বিভিন্ন মহলের মতে, জেলায় ডেঙ্গিতে ঠিক কতজন আক্রান্ত, তার হিসেব স্বাস্থ্য দফতরের কাছে নেই। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তারও স্বীকারোক্তি, “সব খবর সময়মতো আসে না। বিশেষ করে কেউ বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমে ভর্তি হলে সেই খবর পেতে অনেক দেরি হয়। কখনও কখনও রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পরে আমরা জানতে পারি। আবার কখনও জানতেই পারি না।’’ ফলে, ডেঙ্গির সার্বিক চিত্র পরিষ্কার হয় না।
পরিস্থিতি দেখে জেলার সব বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে কেউ ভর্তি হলে সেই খবর দ্রুত জেলায় জানাতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “সঠিক তথ্য পেতেই এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আমাদের কাছে সঠিক তথ্য থাকলে ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠানো যায়।’’ জেলার আর এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, হাসপাতালগুলোকে বলা হয়েছে, ডেঙ্গির মতো উপসর্গ নিয়ে যারা আসবেন, তাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে।
চলতি মরসুমে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ঠিক কত? জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা ১২০। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন খড়্গপুর শহরের আর একজন খড়্গপুর গ্রামীণের বাসিন্দা। যদিও বেসরকারি সূত্রের দাবি, আক্রান্তের সংখ্যাটা দু’শোরও বেশি। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে অনেকে জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। আগেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম দিকে স্বাস্থ্য দফতর তেমন গা করেনি। সেই সুযোগেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করে।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, “বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রব বাড়ছে। নিয়মিত আবর্জনা পরিস্কার না- হওয়াতেই এই সমস্যা। বৃষ্টিতে জঞ্জাল তা ধুয়ে নর্দমায় গিয়ে পড়ছে, জল জমছে। নোংরা জলে বংশবৃদ্ধি করছে মশা।’’ ডেঙ্গি এড়াতে গেলে এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপর জোর দিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সব পঞ্চায়েত সমিতি এবং পুরসভাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। কোনও ভাবেই জল বেশিক্ষণ জমে না থাকে এবং জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।