Midnapore Dengue

শীত পড়লেও রাশ নেই ডেঙ্গিতে

শনিবার ঘাটালে এক প্রশাসনিক বৈঠক হবে। থাকবেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি। সেখানে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:১০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

শীত শীত পড়তে শুরু করলেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হু-হু করে কমবে, মনে করেছিলেন জেলার একাংশ স্বাস্থ্যকর্মী। শীত পড়তে শুরু করেছে। তবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সে ভাবে কমছে না। একাংশ স্বাস্থ্যকর্তার পর্যবেক্ষণ, বেশ কিছু এলাকায় জল জমে রয়েছে। জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে। এখনও ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে ঘাটালে। ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকে রোজই কয়েকজন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছিল ঘাটালের
বিস্তীর্ণ অঞ্চল।

Advertisement

আজ, শনিবার ঘাটালে এক প্রশাসনিক বৈঠক হবে। থাকবেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি। সেখানে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হতে পারে। বৈঠকে থাকার কথা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী প্রমুখেরও। ডেঙ্গি আক্রান্ত বেড়ে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে ২ হাজার পেরিয়েছে। তিন হাজারের দিকে! একাংশ স্বাস্থ্যকর্মীর মতে, পুজোর আগের ভারী বৃষ্টিতে জলের স্রোতে, জমা জলে থাকা লার্ভা বেরিয়ে গেলে রক্ষা ছিল। কিন্তু জেলার সর্বত্র সেটা হয়নি। বিশেষ করে ঘাটালের দিকে হয়নি। বরং নতুন করে বৃষ্টির জল কোথাও কোথাও জমেও গিয়েছিল। জমা জলে ফের মশা জন্মেছে। জেলার একাংশ স্বাস্থ্য আধিকারিকের মতে, নতুন করে আর বৃষ্টি না হলে নভেম্বরের মধ্যে ডেঙ্গি পুরোপুরি চলে যাবে।

জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণেই।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘সবদিক নিয়মিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা হচ্ছে। সব রকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ জেলায় ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের পিছনে কয়েক সপ্তাহ আগের বিক্ষিপ্ত অল্প-মাঝারি বৃষ্টি একটি কারণ বলে জানাচ্ছেন জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক। তাঁর কথায়, ‘‘আগেই টানা ভারী বৃষ্টি হলে ডেঙ্গিবাহী মশার এতটা বংশবিস্তার সম্ভব ছিল না।’’

Advertisement

গত বেশ কয়েক বছরের তুলনায় পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি সংক্রমণের প্রকোপ এ বারই সবচেয়ে বেশি। এর আগের ১০- ১২ বছরে কখনও জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার পেরোয়নি। এ বার সংখ্যাটা দু’হাজার পেরিয়ে তিন হাজারের দিকে! জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ডেঙ্গি সংক্রমণের হার কিন্তু খুব একটা বাড়েনি! এ বার বেশি সংখ্যায় ডেঙ্গি পরীক্ষা হচ্ছে। তাই তুলনায় বেশিজনের ডেঙ্গি ধরা পড়ছে

চলতি বছরে ২ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২,১৯১ জন। এখনও রোজই জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার নতুন করে ৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ২ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর, এই সময়ের মধ্যে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২২৭ জন।

৯ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর, ২৩৪ জন। ১৬ থেকে ২২ অক্টোবর, ১৩৩ জন। ২৩ থেকে ২৯ অক্টোবর, ১৩৬ জন। ৩০ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর, ৬৯ জন। একাংশ জেলাবাসীর দাবি, মশা- দমন কর্মসূচি ঠিকঠাক ভাবে হচ্ছে না সর্বত্র। তাই এ বার ডেঙ্গির এতটা প্রকোপ
দেখা দিয়েছে।

অগস্টে আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল না। তবে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরেই ভয়ঙ্কর চেহারা নেয় ডেঙ্গি। জেলার শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মেদিনীপুর এবং খড়্গপুরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন