শব্দ রহস্যের নিষ্পত্তি হয়নি। তবে আতঙ্কের লেশমাত্র নেই। সমুদ্রের পাড়ে ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই, শনিবার দুপুরে বিকট আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল সৈকত সুন্দরী দিঘা। তারপর থেকে আতঙ্ক গ্রাস করেছিল পর্যটন শহরকে।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও জানা যায়নি কীসের শব্দে কেঁপে উঠেছিল শহর। কোথা থেকেই বা এসেছিল সেই শব্দ। সে সময় যে সব মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে ছিলেন, এ দিন বন্দরে নেমেছেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল সমুদ্রের ভিতর থেকেও ওই শব্দ উঠেছে। কিন্তু মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা অনেক ক্ষীণ শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন স্থলভূমির দিক থেকে। মাছধরা ট্রলারে ফেরা এক মৎস্যজীবীর দাবি, “সমুদ্রের মাঝখানেও আওয়াজ শুনেছি। তবে এতটা তীব্র নয়।’’
তা হলে ঠিক কী হয়েছিল? এখনও বলতে পারছে না প্রশাসন। তবে সর্বত্রই একটা গা-ছাড়া ভাব। এ দিন আর নতুন করে কোনও পদক্ষেপ করেনি কোস্টগার্ড বা কোস্টাল পুলিশ। শব্দ রহস্য উদ্ঘাটনে কোনও কমিটি গঠিত হয়নি। কোনও প্রতিনিধি দলও ঘটনাস্থলে আসেনি। ওডিশার চাঁদিপুরও সম্পূর্ণ নিশ্চুপ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু আবার বলেন, “কীসের শব্দ তা জানা যায়নি। তবে নতুন করে কিছু হয়নি। কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তাই মামলা বা তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি।’’ তাঁর দাবি, স্থল ভাগে কিছু হয়নি।
শনিবার অনেকেই বলাবলি করেছে, বোধহয় এমন কোনও বিস্ফোরণ বা পরীক্ষা করেছে প্রশাসন, যা সাধারণ মানুষের জানার কথা নয়। সবটাই হয়েছে দেশের স্বার্থে। তাই সকলে চুপ। কিন্তু তেমন যদি হতো তা হলে সে তথ্য থাকত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের কাছে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তরফেও জানতে চাওয়া হয়েছে শব্দের উৎস কী? ফলে দেশের স্বার্থ বলেও আর মানতে চাইছেন না সাধারণ মানুষ।
কিছুই হয়নি— বলছেন পর্যটকেরাও। রবিবারের দিঘায় ছুটি কাটাতে বেহালা থেকে এসেছিলেন তপন রায়। তিনি বলেন, “যা হওয়ার হয়েছে। আর হবে বলে মনে হয় না। তাই এ নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।’’ আবার নদিয়া থেকে সপরিবারে এসেছেন কৌশিক সমাদ্দার। শনিবার শব্দ আতঙ্কে সমুদ্রে নামা হয়নি। নিষেধাজ্ঞাও ছিল নিরাপত্তারক্ষীদের তরফে। এ দিন তাই সকাল থেকেই নেমে পড়েন জলে। ভয় করছে না? উত্তর এল, “ছাড়ুন তো ভয়! দিঘায় এসেছি। আনন্দ করছি।’’ এমনকী ওল্ড দিঘার বিপজ্জনক এলাকায়ও অনেকে নেমে পড়েছিলেন সমু্দ্রে।