মাস ঘুরলেও মেলেনি ডিজিট্যাল কার্ড, ক্ষোভ

সাড়ে তিন লক্ষ জনসংখ্যা বিশিষ্ট খড়্গপুর শহরের অনেকেই এখনও ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০০
Share:

গত অক্টোবর মাসে ডিজিট্যাল কার্ডের আবেদনকারীদের পনেরো দিনের মধ্যে নতুন কার্ড দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল খাদ্য দফতর। তারপরে এক মাস হয়ে গেলেও গ্রাহকেরা এখনও ডিজিট্যাল কার্ড পাননি। নতুন কার্ড না মেলায় রেশন সামগ্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক গ্রাহক। শুধুমাত্র ডিজিট্যাল কার্ডধারীদের জন্য খাদ্য দফতর রেশন সামগ্রী বরাদ্দ করার লোকসানের মুখে পড়ছেন ডিলারেরাও।

Advertisement

সাড়ে তিন লক্ষ জনসংখ্যা বিশিষ্ট খড়্গপুর শহরের অনেকেই এখনও ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পাননি। ডিলারদের দাবি, ডিজিট্যাল কার্ড ছাড়া খাদ্য সরবরাহ দফতর রেশন সামগ্রী বরাদ্দ করছে না। এখনও পর্যন্ত যে সংখ্যক গ্রাহক ডিজিট্যাল কার্ড পেয়েছেন, সেই অনুযায়ী কম পরিমাণ রেশন সামগ্রী বরাদ্দ হচ্ছে। ফলে লোকসান বাড়ছে। একইসঙ্গে ডিজিট্যাল কার্ড পাননি এমন গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে প়ড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ ডিলারদের।

গ্রাহকদের বিক্ষোভের আশঙ্কাতেই গত সেপ্টেম্বর মাসে দোকান বন্ধ রেখেছিলেন রেশন ডিলারেরা। পরে খাদ্য সরবরাহ দফতরের আশ্বাসে দোকান খোলা হয়। গত অক্টোবর মাসে ডিজিট্যাল কার্ডধারী ও ডিজিট্যাল কার্ড নেই এমন সব গ্রাহকদের জন্য বরাদ্দ না মেলায় ফের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে দফায় দফায় বৈঠকে বসেছেন খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিকরা। সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে যাওয়া ডিজিট্যাল রেশন কার্ডগুলি পুরসভাকে দ্রুত বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়। ডিজিট্যাল কার্ডের জন্য আবেদনকারীদেরও পনেরো দিনের মধ্যে কার্ড তৈরি করে বিলির আশ্বাস দিয়েছিল খাদ্য সরবরাহ দফতর।

Advertisement

যদিও এখনও অনেক গ্রাহক ডিজিট্যাল কার্ড পাননি বলে অভিযোগ। ডিজিট্যাল কার্ড না থাকায় রেশনও পাচ্ছেন না তাঁরা। খড়্গপুরের সুভাষপল্লির রেশন গ্রাহক প্রদীপ ঘোষ বলেন, “আমি ট্রেনে-স্টেশনে চা বিক্রি করি। দু’বার আবেদন করার পরেও এখনও ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পাইনি। মাস দু’য়েক ধরে তাই রেশন সামগ্রীও পাচ্ছি না। কেরোসিনও মিলছে না। কী ভাবে দিন কাটাচ্ছি সেটা শুধু আমিই জানি।”

রেশনে শুধুমাত্র ডিজিট্যাল কার্ডধারী গ্রাহকদের জন্য বরাদ্দ আসায় লোকসান বাড়ছে বলে দাবি ডিলারদেরও। গোলবাজারের রেশন ডিলার নরেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, “খাদ্য দফতর বলার পরে এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও অনেক গ্রাহক ডিজিট্যাল কার্ড পাননি। এত কম বরাদ্দ নিয়ে দোকান খুলে লোকসান বাড়ছে। শুধুমাত্র গ্রাহকদের কথা ভেবে রেশন দোকান খুলছি। কিন্তু দীর্ঘদিন এ ভাবে চলতে থাকলে দোকান চালানো মুশকিল হবে।”

খড়্গপুর রেশন ডিলার সংগঠনের সম্পাদক শিশির রায় বলেন, “খাদ্য দফতরের আশ্বাসে ভরসা রেখেই আমরা কম বরাদ্দ নিয়েও দোকান খুলছি। আবেদনকারীরা নতুন রেশন কার্ড পাবে বলে বলা হলেও এখনও কার্ড তৈরি হয়নি। এমনকী ডিজিট্যাল কার্ডের নিরিখে কেরোসিনও বরাদ্দ হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি জেলা নিয়মককে জানিয়েছি।” যদিও কেরোসিন না দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে দফতরের জেলা নিয়ামক সুকমল পণ্ডিত বলেন, “কেরোসিন বরাদ্দ হয়েছে। গ্রাহকেরা কেন পাচ্ছেন না জানি না। আর সব কাজ তো সময় মেনে হয় না। তবে দ্রুত আবেদনকারীরা ডিজিট্যাল কার্ড পাবেন।’’ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের ডিজিট্যাল কার্ড ছাপতে চলে গিয়েছে। ডিলারদের প্রায় সমস্ত দাবিই তাঁরা মেনে নিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন