তৃণমূল সাংসদ উমা সরেনের ‘খারাপ পুলিশ’ তত্ত্বকে সমর্থন জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার দুপুরে ঝাড়গ্রামে দলীয় সাংগঠনিক কর্মসূচিতে এসেছিলেন দিলীপবাবু। সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপবাবু জানান, ঝাড়গ্রামের সাংসদের সঙ্গে তিনি একমত। জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে ফের সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
গত শনিবার লালগড়ে বন দফতরের অনুষ্ঠানে ভারতীদেবীর উপস্থিতিতেই ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা অভিযোগ করেন, কিছু সংখ্যক খারাপ পুলিশ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য জঙ্গলমহলের মানুষকে আইন ভাঙতে প্ররোচিত করছেন। এ দিন এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে দিলীপবাবু বলেন, “আমি সাংসদের সঙ্গে একমত। তবে মাননীয়া সাংসদকে বলব, আপনি যে দলের সাংসদ, সেই দলই এই সব পুলিশ অফিসারদের পুষছে। কিছু পুলিশ অফিসার শাসকদলের তাঁবেদারি আর দুর্নীতি করছেন।’’ খড়্গপুরের বিধায়ক হিসেবে তিনি বিষয়টা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন বলেও জানান দিলীপবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে দিয়ে খড়্গপুরে মাফিয়া তৈরি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে মাফিয়াকে মেরে ফেলা হচ্ছে। গোটা জঙ্গলমহলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর।”
সম্প্রতি সবংয়ের গাছ কাটার একটি মামলায় ভারতীদেবীকে তলব করেছে হাইকোর্ট। সে প্রসঙ্গ টেনে দিলীপবাবু বলেন, “এসপিকে শমন পাঠিয়ে আদালত তলব করছে। এটা কী একজন আইপিএস অফিসারের পক্ষে সম্মানের!”
রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু খুনে ভারতীদেবী ও অন্যান্য পুলিশ অফিসারদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তেরও দাবি তোলেন দিলীপবাবু। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তিনি চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান। দিলীপবাবু বলেন, “মৃতের স্ত্রী পূজা নায়ডু ও শাসকদলের যে দাবি করা উচিত ছিল, সেই দাবি কিন্ত আমি করেছি। সিবিআই তদন্তে হলে ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়বে।” শ্রীনু খুনের মামলায় তাঁকে জড়ানোর চেষ্টা বলে অভিযোগ তুলে দিলীপবাবু বলেন, “খড়্গপুরে বাইক চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। পুলিশের দম থাকলে আমাকে ধরুক। পুলিশের মামলা নিয়ে আমরা ভয় পাই না। জঙ্গলমহলের বহু নেতা-কর্মী জেলও খেটেছেন।” ঝাড়গ্রামে যুব মোর্চার সম্মেলনের পরে তাঁর নামে মিথ্যা মামলা রুজু করা হয় বলেও বিজেপি রাজ্য সভাপতির অভিযোগ। নাম না করে বিধায়ক মানস ভুঁইয়াকেও বিঁধেছেন দিলীপবাবু। তাঁর মন্তব্য, “কংগ্রেসকে ডুবিয়ে এসেছেন। তৃণমূলকেও ডোবাতে বেশি সময় লাগবে না।”
ঝাড়গ্রামে বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার বৈঠকের জন্য প্রশাসনের একাংশের বাধায় জায়গা পেতে সমস্যা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, “এই সভার জন্য দু’বার স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে। হোটেলে সভা করার ঠিক করা হয়েছিল, কিন্তু কর্তৃপক্ষকে প্রশাসনের লোকেরা ধমকাল। সমস্যার মধ্যে সীমিত জায়গায় এই ধর্মশালায় সভা হচ্ছে।”