ঘোলা জলে বাড়ছে বিপদ

মেদিনীপুর নিরাপদ নয় সদর শহরের পানীয় জল। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরে যে পানীয় জল সরবরাহ হয়, তাতে সাধারণের তুলনায় প্রায় পাঁচগুন বেশি আয়রন অর্থাৎ লোহা চূর্ণ রয়েছে।

Advertisement

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৭
Share:

মেদিনীপুর নিরাপদ নয় সদর শহরের পানীয় জল। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরে যে পানীয় জল সরবরাহ হয়, তাতে সাধারণের তুলনায় প্রায় পাঁচগুন বেশি আয়রন অর্থাৎ লোহা চূর্ণ রয়েছে। শহরের জলে মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের কথা মানছেন মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু। তিনি বলেন, “মেদিনীপুরে আর্সেনিকের সমস্যা নেই। তবে আয়রনের সমস্যা রয়েছে।’’

Advertisement

জলে অতিরিক্ত আয়রন মানেই বিপদ! নানা রোগের আশঙ্কা! পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও মানছেন, “পানীয় জলে মাত্রারিক্ত আয়রন থাকা ভাল নয়। এর থেকে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে।’’ যদিও পুরপ্রধানের আশ্বাস, “বিষয়টি দেখছি। প্রয়োজনে আরও ভাল ভাবে জল
পরিশোধনের ব্যবস্থা করা হবে।” পুরসভার এক সূত্রে খবর, সম্প্রতি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) উদ্যোগে এই সমীক্ষা চালানো হয়। পুরসভা সমীক্ষক দলকে সব রকম সহযোগিতা করে। দলে ছিলেন কয়েক জন ছাত্র ও শিক্ষক। শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে পরীক্ষাগারে সেই নমুনা খতিয়ে দেখা হয়। সাধারণত ১ লিটার জলে ০.৩০ মিলিগ্রাম আয়রন থাকতে পারে। কিন্তু শহরে যে পানীয় জল সরবরাহ হয়, সেখানে ১ লিটারে আয়রন রয়েছে ১.৪৪ মিলিগ্রাম।

বাসিন্দাদের দাবি, শহরের নানা এলাকায় লাল আর ঘোলাটে জল পড়ে কল থেকে। এ নিয়ে পুরসভায় অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। সমীক্ষক দল কাপড় দিয়ে জল শোধনের চেষ্টা করেন। তাতেও আয়রন কমেনি। ভাঁজহীন কাপড়ে জল শোধনের পরে দেখা যায়, আয়রনের পরিমাণ সামান্য কমে হয়েছে মাত্র ১.১০ মিলিগ্রাম। দু’ভাঁজের কাপড়ে ০.৭৮, তিন ভাঁজের কাপড়ে ০.৫২, চার ভাঁজের কাপড়ে ০.৪৫। অর্থাৎ, কাপড় চার ভাঁজ করে জল শোধন করার পরেও আয়রনের মাত্রা স্বাভাবিক হয়নি (০.৩০)। এক পুরকর্তা মানছেন,
“এটা যথেষ্ট উদ্বেগের।’’

Advertisement

মেদিনীপুরের জনসংখ্যা প্রায় দু’লক্ষ। এখন শহরে দিনে ১৮.২ মিলিয়ন লিটার জল সরবরাহ করা হয়। এক পুরকর্তার কথায়, “মেদিনীপুরে নয়া জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হবে। তা রূপায়িত হলে শহরের সর্বত্র পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছবে। প্রকল্প শেষ হতে ৪-৫ বছর লাগবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement