পানের-অযোগ্য: নিজস্ব চিত্র।
কল খুললেই বেরোচ্ছে ঘোলা জল। শুধু তাই নয়, সেই জলে আবার মিলছে পোকা, কাঁকড়ার বাচ্চা।
গরমে এমনিতেই জলের কষ্ট। তার উপর জলের এমন চেহারায় রীতিমতো নাজেহাল হলদিয়া বন্দর এলাকার আবাসানের বাসিন্দারা। আতঙ্কে অনেকেই সেই জল ব্যবহার বন্ধ করেছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গরম পড়তে না পড়তেই গত এক মাস ধরে এমন অবস্থা চলছে। জলের সমস্যা নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বার বার জানানো সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি।
বন্দরের চাকুরীজিবী নন, অথচ পেশার কারণে অনেকে হলদিয়া শহরের বন্দর এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে বাস করেন। বন্দরের আবাসনে বহিরাগত ভাড়াটিয়ার সংখ্যা শতাধিক। পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে জেরবার এই আবাসিকরা। তাঁদের অভিযোগ, এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলেই হুমকি দিচ্ছেন বন্দরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা। এই অবস্থায় বহিরাগত আবাসিকরা ‘বন্দরের আবাসিক ভাড়াটে উন্নয়ন সমিতি’ নামে একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ করেছেন।
হলদিয়ার একটি স্কুলের শিক্ষক এবং এই উন্নয়ন সমিতির সদস্য অসিত শতপথি বলেন, ‘‘বছরে জলের জন্য কর বাবদ তিন হাজার টাকা দিয়ে থাকি। তারপরেও আমাদের জলের সমস্যা প্রকট। অভিযোগ জানাতে গেলে বন্দর কর্তৃপক্ষের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, বহিরাগত ভাড়াটিয়াদের তরফে তাঁরা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ এবং নিয়মিত ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নোংরা জলের কারণে অনেকের ত্বকের রোগ দেখা দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সকাল থেকে কলে জল থাকে না। বেলা দশটার পর জল এলেও তা অনিয়মিত। এমনকী রাতেও জল থাকে না। পানীয় জলের জন্য গভীর নলকূপগুলির বেশিরভাগই খারাপ। এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, হলদিয়া পুর এলাকার বাসিন্দাদের জলকর নেওয়া হয় না। অথচ পুর এলাকায় থাকা সত্ত্বেও এবং জলের জন্য টাকা দিয়েও জল না পেয়ে তাঁরা হতাশ।
হলদিয়া বন্দরের সিনিয়ার ডেপুটি ম্যানেজার প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমার হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ এর কাছ থেকে কিছু জল কিনে থাকি। সেই জলের গুণগত মান ঠিক না থাকায় আমরা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদকে চিঠি দিয়েছি। এইচডিএ-র জল যেমন সরবরাহ করার তেমনই করা হয়।’’ ট্যাঙ্কও নিয়মিত পরিষ্কার হয় বলে তিনি দাবি করেন।