Hotels

রোশনাই নেই, শুধু হতাশা

গত ১৪ মাস ধরে তালা বন্ধ প্রায় সব অতিথি শালা থেকে অনুষ্ঠান বাড়ি বা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

তমলুক শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৬:০৪
Share:

ফাইল চিত্র।

গত বছরও মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত অতিথিশালা জমাজমাট থাকত বিয়েবাড়ির সানাইয়ের সুরে। বিয়ের মরসুম বাদে জন্মদিন থেকে অন্নপ্রাশন কোনও না কোনও অনুষ্ঠানে আলোয় ঝলমল করত অনুষ্ঠান বাড়ি বা হলগুলি। হঠাৎই সেই ছবিটা বদলে দিয়েছে ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতি। যে কারণে গত ১৪ মাস ধরে তালা বন্ধ প্রায় সব অতিথি শালা থেকে অনুষ্ঠান বাড়ি বা হল।

Advertisement

করোনা মোকাবিলায় কার্যত লকডাউনে রাজ্য সরকার বিয়েবাড়ি সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৫০ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে তমলুক, নন্দকুমার, মেচেদা সহ জেলার অধিকাংশ অনুষ্ঠান হল বা অতিথিশালার বন্ধ দরজা খোলায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না সেখানকার মালিকেরা। ফলে তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি, এগরা মহকুমা মিলিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অতিথিশালা বা অনুষ্ঠান হলের জন্য নিযুক্ত কর্মীদের রুজি রোজগারে টান পড়েছে। কোথাও কর্মীদের কাজ চলে গিয়েছে। কোথাও কম বেতনেই কাজ করছেন কর্মীরা।

তমলুক শহর সংলগ্ন নারায়ণদাঁড়িতে একটি অতিথিশালার মালিক বিজয় সামন্ত বলেন, ‘‘বিয়ে, অন্নপ্রাশন, সেমিনার-সহ প্রতি বছর অন্তত ৪০ থেকে ৫০টি অনুষ্ঠান হত আমাদের অনুষ্ঠান হলে। গত বছর মার্চের মাঝামাঝি থেকে সব বন্ধ। বিয়ে বা অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান করতে চাইলেও নিরাপত্তার কারণে ভাড়া দিচ্ছি না।’’ নন্দকুমার বাজারে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে একটি অতিথিশালা চলছিল ১০ বছর ধরে। গত বছর মার্চ মাসে লকডাউনের পর ওই অতিথিশালা বন্ধ থাকলেও গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে ফের অতিথিশালা তালা বন্ধ রয়েছে। সেটির মালিক শঙ্করপ্রসাদ কুইতি বলেন, ‘‘বছরে গড়ে প্রায় ৫০টির বেশি অনুষ্ঠানের আয়োজন হত। কিন্তু গত বছর মার্চ থেকে সব অনুষ্ঠান প্রায় বন্ধ। মাঝে কয়েক মাস খোলা হলেও ভাড়া না মেলায় ফের বন্ধ করে দিয়েছি।’’ তিনি জানান, অতিথিশালা বন্ধ থাকলেও ট্রেড লাইসেন্স ও কমার্শিয়াল ট্যাক্স বাবদ টাকা জমা দিতে হচ্ছে। অথচ আয় নেই। তার উপর এখানে যে সব কর্মী ছিল তাদের এখনও বেতন দিতে হচ্ছে। ফলে লোকসান হচ্ছে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে এখন তারই অপেক্ষা।

Advertisement

মেচেদা বাজারের একটি বড় অতিথিশালার মালিক তথা জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান বলেন, ‘‘২০১২ সালে এই অতিথিশালা চালুর পর থেকে প্রতি বছর বিয়ের মরসুমে মাসে কমপক্ষে ২০টি বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন হত এখানে। কিন্তু গত বছর লকডাউনের পর থেকে কেউ বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া নেয়নি। অতিথিশালার ৮-১০ জন কর্মীকে বেতন দিতে হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার বিয়ে বাড়ি সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য সর্বাধিক ৫০ জনের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না। তাই অতিথিশালার অনুষ্ঠান হল তালা বন্ধই রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন