DM

ধর্নায় সাংসদ, দেখলেনই না জেলাশাসক

বেশ কিছুদিন ধরেই জেলাশাসক সাংসদের ফোন ধরছেন না বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৫:২৫
Share:

দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে ধর্নায় বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে জেলাশাসকের গাড়ি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

উন্নয়নে অসহযোগিতা করছেন জেলাশাসক— এই অভিযোগে ‘প্রতীকী ধর্না’য় বসলেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। শুক্রবার সকালে জেলাশাসকের কার্যালয় চত্বরেই কিছুক্ষণের জন্য ওই ধর্না চলে। আর তখনই দফতরে আসেন জেলাশাসক আয়েষা রানি। কিন্তু তিনি গাড়ি থেকে নামার ‘সৌজন্য’ও না দেখানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাংসদ।

Advertisement

এ দিনের এই ঘটনার পরে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন কুনার। সাংসদের অভিযোগ, আয়েষা উন্নয়নের বরাদ্দ খরচে কার্যত রাজনীতি করছেন। নির্বাচিত সাংসদকে অসম্মান করছেন। সংসদের আসন্ন অধিবেশনেও জেলাশাসকের কথা তুলবেন বলে জানিয়েছেন কুনার। গোটা ঘটনায় জেলাশাসকের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সাংসদের ধর্নার বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষমহলে জানিয়েছেন।’’

বেশ কিছুদিন ধরেই জেলাশাসক সাংসদের ফোন ধরছেন না বলে অভিযোগ। জেলার করোনা-পরিস্থিতি জানতে বার বার জেলাশাসককে চিঠি দিয়েও তিনি জবাব পাননি। এ দিকে, গত বছর সাংসদ হওয়ার পরে সাংসদ তহবিল থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার বেশ কিছু প্রকল্পের জন্য প্রথম পর্যায়ে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করেন কুনার। সাংসদের দাবি, গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ জেলাশাসকের দফতরে টাকা চলে এলেও কাজ শুরু করা হচ্ছে না। এ নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলতে কুনার বৃহস্পতিবার জেলা কালেক্টরেটে গিয়েছিলেন। কুনারের দাবি, জেলাশাসকের দফতরকে জানিয়ে সময় চেয়েই গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ভিজিটার্স রুমে বসিয়ে রেখেও জেলাশাসক দেখা করেননি। ফোনও ধরেননি।

Advertisement

শুক্রবার সকাল সোয়া দশটা নাগাদ জেলাশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছন কুনার। তখনও আয়েষা পৌঁছননি। মাটিতে ধর্নায় বসেন সাংসদ। সঙ্গে ছিলেন দলীয় পতাকা হাতে বিজেপি-র কিছু নেতা-কর্মী। সকলের জামায় পিন দিয়ে আটকানো পোস্টারে লেখা, ‘সাংসদ তহবিলের টাকায় কাজ কেন হচ্ছে না? ট্রাইব্যাল অ্যাভাইসারি কাউন্সিল কেন গঠিত হয়নি? প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা থেকে জঙ্গলমহলের অধিকাংশ মানুষ কেন বঞ্চিত?’

ধর্না চলাকালীন সকাল ১১টা ১০ নাগাদ পৌঁছয় জেলাশাসকের গাড়ি। ধর্নায় বসা সাংসদকে পাশ কাটিয়ে গাড়ি জেলাশাসকের অফিস চেম্বারের কাছে থামে। সটান কার্যালয়ে ঢুকে যান আয়েষা। এর মিনিট দশেক পরে প্রতীকী ধর্না সেরে ফিরে যান সাংসদও। কুনারের ক্ষোভ, ‘‘ন্যূনতম সৌজন্য দূর, একজন সাংসদের সঙ্গে কী আচরণ করতে হয়, সেই প্রোটোকলও জেলাশাসক মানছেন না। একজন আইএএস অফিসারের এই আচরণ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাব।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী সাংসদের ধর্নায় ছিলেন না। তবে সুখময়ও বলেন, ‘‘সাংসদকে পাশ কাটিয়ে জেলাশাসক গাড়ি নিয়ে দফতরে এলেন। নেমে কথা বলার সৌজন্যটুকুও দেখাননি।’’

জেলাশাসক প্রসঙ্গে সাংসদের অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন। তবে তাঁর দাবি, ‘‘সাংসদ দলীয় পতাকা নিয়ে ধর্নায় বসে প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁর উদ্দেশ্য রাজনীতি করা। তবে এত করেও জঙ্গলমহলবাসীকে বিভ্রান্ত করতে পারবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন