একশো দিনের কাজে ডেবরা ব্লকের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত পিছিয়ে পড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন জেলাশাসক।
সোমবার ডেবরা ব্লকের অডিটোরিয়ামে পর্যালোচনা বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা একশো দিনের কাজে ব্লকের অগ্রগতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। জেলাশাসক ছাড়াও ওই বৈঠকে ছিলেন মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার, বিডিও ললিত সেন, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুনমুন সেন মণ্ডল প্রমুখ।
ব্লকের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের নিয়ে এই বৈঠক হয়। সেখানে একশো দিনের কাজে কেন এই ব্লকের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পিছিয়ে রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জেলাশাসক। সেই সঙ্গে দ্রুত লক্ষ্যমাত্রা পূরনের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগেই জেলা সদর মেদিনীপুরে গোটা জেলার সমস্ত ব্লককে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই ডেবরার কয়েকটি অঞ্চল পিছিয়ে থাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের দাঁড় করিয়ে ধমক দিতে দেখা যায় জেলাশাসককে। এর পরেও যে পরিস্থিতি বদল হয়নি তা ব্লকের পর্যালোচনা বৈঠকে ধরা পড়ে। সেখানেই উপস্থিত জেলাশাসক কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ব্লক প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন প্রতিদিন গড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু ১৮০০ জন শ্রমিক নিযুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু ডুঁয়া-২, রাধামোহনপুর-২, ভরতপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না। এক্ষেত্রে ডুঁয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এই গ্রাম পঞ্চায়েতে দিনে ১৮শো জন শ্রমিক নিযুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গড়ে মাত্র ৭৮জন শ্রমিক নিযুক্ত হচ্ছেন। এমনকী গ্রাম পঞ্চায়েতে মাসে ২৪হাজার শ্রমদিবস পূরনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তার থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত। এতেই চটেছেন জেলাশাসক। তিনি এপ্রিল ও মে মাস মিলিয়ে মোট ৪৮হাজার শ্রমদিবস পালনের লক্ষ্যমাত্রা পূরনের নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের দাবি, এলাকায় এত দিন চাষাবাদের কাজ চলায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ওপরে ডুঁয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে বালিচকের মতো শহর এলাকা থাকায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে। এর জেরেই পিছিয়ে পড়ছে ওই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, “একশো দিনের কাজ নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে খুব ভাল কাজ হয়েছে আবার কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত কাজে একটু পিছিয়ে রয়েছে। সেগুলি কীভাবে মেরামত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।” তবে জেলাশাসক এমন অসন্তোষ প্রকাশ করায় অস্বস্তিতে পড়েছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুনমুন সেন মণ্ডল বলেন, “আমাদের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে পিছিয়ে থাকায় জেলাশাসক একটু ক্ষুব্ধ হয়েছেন। চাষের কাজ চলায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। মে মাসের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করব।”