মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ কুকুর নিয়ে পাহারা। নিজস্ব চিত্র।
গত বছর প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে যে অপেক্ষার সূত্রপাত, তার কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজোয় মেদিনীপুর শহরে যানজট চেনা ছবি। আর ভিড়ের মধ্যে বাড়ে পকেটমারের উপদ্রবও। পুজোর শহর নির্বিঘ্ন করতে তাই একাধিক কর্মসূচি নিচ্ছে পুলিশ।
সুরক্ষায় মহিলা পুলিশ
খাকি পোশাকের পুলিশ তো থাকছেই। তার সঙ্গেই থাকছে সাদা পোশাকের পুলিশও। পুজোয় বিভিন্ন মণ্ডপে ভিড়ের মধ্যেই মিশে থাকবে পুলিশ। ভিড়ের মধ্যে থাকা লোকজনের উপর কড়া নজর রাখবেন তাঁরা। পুজোয় শহরের সুরক্ষা আঁটোসাটো করতে একাধিক বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। ভিড়ে যাতে কেউ মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করতে পারেন সে দিকে নজর রাখতে থাকবে ‘অ্যান্টি ইভটিজিং টিম’। দলে মহিলা পুলিশও থাকছে।
পকেটমার, সাবধান!
অন্য সময়ের থেকে পুজোয় খরচ একটু বেশিই হয়। তাই মানিব্যাগের ওজনও একটু বেশিই থাকে। এই সুযোগই কাজে লাগাতে চায় পকেটমাররা। অন্য সময়ের থেকে পুজোয় পকেটমারির সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যায়। এ বার অবশ্য পকেটমারি রুখতে থাকছে বিশেষ ‘অ্যান্টি স্ন্যাচিং টিম’। ভিড়ের মধ্যে হাতসাফাই রুখতে সদা সতর্ক থাকবে এই বিশেষ দল।
শিশুদের পরিচয়পত্র
ভিড়ের মধ্যে বাচ্চার হাত ছেড়ে গেলে হতে পারে বিপদ। তখন পুজোর আনন্দ মুহূর্তে বিষাদে পরিণত হতে পারে। এ বার বাবা-মায়ের হাত ধরে পুজো দেখতে বেরোনো বাচ্চাদের একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। এই পরিচয়পত্রটি বাচ্চাদের গলায় ঝুলবে। সেখানেই থাকবে কিছু তথ্য। যেমন, শিশুটির নাম, বাবা-মায়ের নাম, বাড়ির ঠিকানা, মোবাইল নম্বর প্রভৃতি। এরফলে, ভিড়ের মধ্যে বাচ্চা হাতছাড়া হয়ে গেলেও যে কেউই তার নাম-পরিচয় জানতে পারবেন। তাকে বাবা- মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতেও পারবেন তিনি।
অটো-টোটোয় রাশ
পুলিশি সতর্কতা
• পার্কিং প্লেসে গাড়ি রাখুন।
•ট্রাফিক নিয়মাবলী মেনে পথ চলুন
• মদ্যপান করে ঘোরা নিষেধ।
•প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের সাহায্য নিন।
• সন্দেহজনক বস্তু দেখলেই থানা বা পুলিশ বুথে খবর দিন।
•ভিড়ে বাচ্চাদের নজরে রাখুন।
•মেয়েদের উত্যক্ত করলে হতে পারে হাজতবাস।
পুজোর ক’দিন অটো-টোটোয় রাশ টানছে পুলিশ। পুজোর ক’দিন দুপুর ১২টা থেকে পরের দিন ভোর ৪টে পর্যন্ত শহরে কোনও অটো-টোটো চলবে না। ইতিমধ্যে অটো-টোটো মালিকদের এ কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পুজোর দিনগুলোয় অটো-টোটোয় রাশ টানতেই হত। না- হলে শহর অচল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। শহরে দুপুর ১২টার পর অটো-টোটো চলবে না। সব দিক খতিয়ে দেখেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
সহায়তায় পুলিশ
মেদিনীপুর শহরের ৫টি এলাকায় পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ থাকছে। রাঙামাটি, বিধাননগর, কেরানিতলা, পঞ্চুরচক ও অরবিন্দনগরে এই বুথ হবে। এই সব বুথে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে। থাকবে পুজোর গাইড ম্যাপও। সঙ্গে পানীয় জলের ব্যবস্থা। তৃষ্ণা পেলে পুলিশের এই বুথে এসে জল খাওয়া যেতে পারে। রোদ এড়াতে বাচ্চাদের জন্য থাকছে টুপির ব্যবস্থাও।
থাকবে পিকেট
শহরের জনবহুল এলাকায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকবে পুলিশ পিকেট। মেদিনীপুরের বড় পুজোগুলোয় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকছে। শহরে থাকছে ‘ডগ স্কোয়াড’। বুধবার থেকেই পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে।