রাজ্যে যুগ্মভাবে অষ্টম

ডাক্তারি পছন্দ একজনের, অন্যজন চান অধ্যাপক হতে

উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮২ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় অষ্টম স্থান দখল করেছে বৈদূর্য্য। স্কুলেরই আর এক ছাত্র অর্চিষ্মান ভট্টাচার্যও একই নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে অষ্টম স্থানে। ক্লাস ওয়ান থেকে দু’জনেই সহপাঠী। তাই এমন সাফল্য তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে খুশি শিক্ষকেরাও।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০১:০২
Share:

উল্লাস: সাফল্যের খবর পেয়ে স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে বৈদূর্য্য (উপরে বাঁদিকে) এবং অর্চিষ্মান (ডানদিকে, উপরে)। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

মাধ্যমিকে ভাল ফল করলেও মেধা তালিকায় ঠাঁই না পাওয়ায় খুব আফশোস ছিল। উচ্চ-মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান দখল করে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরে খুশি তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের বৈদূর্য্য নায়ক।

Advertisement

উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮২ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় অষ্টম স্থান দখল করেছে বৈদূর্য্য। স্কুলেরই আর এক ছাত্র অর্চিষ্মান ভট্টাচার্যও একই নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে অষ্টম স্থানে। ক্লাস ওয়ান থেকে দু’জনেই সহপাঠী। তাই এমন সাফল্য তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে খুশি শিক্ষকেরাও।

তমলুক শহরের পার্বতীপুরের বাসিন্দা বৈদূর্য্যের বাবা বিদ্যুৎ নায়ক তমলুক হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। মা কেয়া নায়ক গৃহকর্ত্রী। বরাবরই স্কুলে মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিতি ছিল বৈদূর্য্যের। মাধ্যমিকে ছিল ৯৫.২ শতাংশ নম্বর। মেধা তালিকায় স্থান ছিল ১৬ তম। পড়াশোনার পাশাপাশি গল্প ও আধুনিক লেখকদের উপন্যাস পছন্দ তাঁর। পড়ার ফাঁকে চলে ক্রিকেট। বিরাট কোহলির ভক্ত বৈদূর্য্য। স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত বৈদূর্য্যর রাজনীতি না-পসন্দ। প্রিয় বিষয় পদার্থবিদ্যা হলেও বড় হয়ে ডাক্তার হতে চান বৈদূর্য্য। জাতীয় স্তরে কিশোর বৈজ্ঞানিক মেধা অন্বেষণ পরীক্ষাতেও মেধা তালিকায় স্থান করা বৈদূর্য্যর কথায়, ‘‘পদার্থবিদ্যা প্রিয় বিষয়। তবে চিকিৎসক হতে চাই।’’ ছেলের সাফল্যে খুশি বাবা জানালেন, ‘‘নিজের পছন্দমতো বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে ও সফল হোক এটাই চাই।’’

Advertisement

তমলুক শহর লাগোয়া নিশ্চিন্তবসান গ্রামের বাসিন্দা অর্চিষ্মান মাধ্যমিকে পেয়েছিল ৯৩.৩ শতাংশ নম্বর। তখন মেধা তালিকায় স্থান না পেলেও উচ্চ-মাধ্যমিকে ৯৬.৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় ঢুকতে পেরে খুশি তিনিও। বাবা অনুপম ভট্টাচার্য তমলুকের বহিচাড় বিপিনবিহারী শিক্ষানিকেতনের পার্শ্ব-শিক্ষক। মা মৌসুমী ভট্টাচার্য গৃহবধূ। বরাবরই ভাল ছাত্র হিসাবে সুনাম রয়েছে অর্চিষ্মানের। ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথামেটিক্স অলিম্পিয়াডে তাঁর স্থান ৯৯। পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্র-পত্রিকা পড়ে, ক্রিকেট খেলে সময় কাটে তাঁর। পুরনো বাংলা গানেরও বিরাট ভক্ত অর্চিষ্মান। জানান, প্রিয় ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ার স্মিথ। প্রিয় অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। প্রিয় বিষয় অঙ্ক নিয়েই ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে অধ্যাপক হতে চান। তবে এ দিন ফল জানার পর কিছুটা মুষড়ে পড়েন। বললেন, ‘‘আসলে পদার্থবিদ্যায় (৮৮) আর একটু বেশি নম্বর পেলে ভাল হত।’’

দুই ছাত্রের এমন সাফল্যে গোটা স্কুলই আনন্দে মেতেছে। প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘বৈদূর্য্য ও অর্চিষ্মান দু’জনেই বরাবর ভাল ফল করে এসেছে। ওঁদের সাফল্যে স্কুলের অন্য ছাত্ররাও অনুপ্রেরণা পাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন