ই-প্রচারের আঙিনায় মফস্‌সলের পুজোও

মেদিনীপুরের রবীন্দ্রনগর সর্বজনীনের ফেসবুক পেজ রয়েছে। সেই পেজে পুজোর রসিদ থেকে এলাকার ম্যাপও রয়েছে। দেওয়া রয়েছে পুজোয় বিজ্ঞাপন দেওয়ার দরও। পুজোর রসিদ বইতেও থিমের উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
Share:

প্রচার: ই-পেজেও আগমনীর বার্তা। নিজস্ব চিত্র

ই-প্রচারের হাত ধরে আরও জনপ্রিয় হতে চাইছে সর্বজনীন পুজো। বছর কয়েক আগেও যা ভাবা যেত না, এখন সেটাই হচ্ছে। সার্চ করলেই মিলছে মেদিনীপুর- খড়্গপুর শহরের মতো পুজোর তথ্যতালাশ। কোনও পুজো কমিটি ওয়েবসাইট করেছে। কোনও পুজো কমিটি ফেসবুকের মতো সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পেজ খুলেছে। এ বার থিম কি, মণ্ডপের কাজ কতদূর এগলো, পেজে ছবি দেখে জানা যাচ্ছে এ সবও। পুজো কমিটিগুলো নিয়মিত ছবি আপলোড করছে। সবমিলিয়ে ই- হাওয়ায় যেন বদলে যাচ্ছে পুজোর প্রস্তুতির চরিত্রও! যত দিন যাচ্ছে, তত বেশি পুজো কমিটি যেন নিজেদের যুগের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছতে, আরও জনপ্রিয় হতে হাত ধরছে ইন্টারনেটের।

Advertisement

মেদিনীপুরের রবীন্দ্রনগর সর্বজনীনের ফেসবুক পেজ রয়েছে। সেই পেজে পুজোর রসিদ থেকে এলাকার ম্যাপও রয়েছে। দেওয়া রয়েছে পুজোয় বিজ্ঞাপন দেওয়ার দরও। পুজোর রসিদ বইতেও থিমের উল্লেখ রয়েছে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সোমনাথ দাস মানছেন, “আগের থেকে পুজোর ভাবনা সত্যিই অনেক বদলে গিয়েছে। পুজোর তথ্যতালাশে ইন্টারনেটই এখন সহজ মাধ্যম বলে মনে করে তরুণ প্রজন্ম। অনেকেই পুজো দেখতে ইন্টারনেট ঘাঁটেন। এটা তো ঠিক, যত দিন যাচ্ছে, ওয়েবসাইট- ফেসবুক ততই জনপ্রিয় হচ্ছে।” খড়্গপুরের মালঞ্চর আদি পুজো কমিটিরও ফেসবুক পেজ রয়েছে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কৌশিক চক্রবর্তী বলছিলেন, “আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ইন্টারনেটকে উপেক্ষা করা যায় না। এখন তো পুজো দেখতে অনেকেই ইন্টারনেট ঘাঁটেন। গত বছরও আমাদের পুজো অনেকে ইন্টারনেটে দেখেছেন।” মেদিনীপুর- খড়্গপুর শহরে শতাধিক সর্বজনীন পুজো হয়। বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের। পুজো দেখতে প্রচুর মানুষের ঢল নামে দুই শহরে।

মেদিনীপুরের মতো মফফ্সল শহরে এই ই- প্রচারের চলটা শুরু হয়েছিল অবশ্য আগে থেকেই। নিখাদ ভালবাসা থেকে ওয়েবসাইটে মেদিনীপুরের পুজোর ছবি আপলোড করতে শুরু করেছিলেন সঞ্জয় কুণ্ডু। শহরের বাসিন্দা সঞ্জয়বাবু বলছিলেন, “আমি যখন ছবি আপলোড করতে শুরু করি তখন ফেসবুক- ট্যুইটার এ সব চালু হয়নি। সেটা ১৯৯৮ সাল। পুজোর ছবি প্রবাসের অনেকেই দেখেন। আমার আপলোড করা ছবিগুলোও আমেরিকা, লন্ডন, দুবাইয়ের অনেকে দেখেছেন। অনেকে তাঁদের মতামতও জানিয়েছিলেন।” তাঁর কথায়, “এখন অনেকের বাড়িতেই ইন্টারনেট রয়েছে। অনেকের হাতে স্মার্টফোনও চলে এসেছে। যত দিন যাচ্ছে, ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। ইন্টারনেটে পুজোর হালহকিকত জানা গেলে তো ভালই। অনেকেই চান, পুজোয় কোথায় কী হচ্ছে তা নেট ঘেঁটে জেনে নিতে। তাই পুজো কমিটিগুলোও ওয়েবসাইট- ফেসবুক পেজ খুলছে। সেখানে পুজো প্রস্তুতির ছবি আপলোজ করছে। এটা ভাল।” সঞ্জয়বাবু বলছিলেন, “পুজোকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরলে হলে ইন্টারনেটের বিকল্প নেই।” থিম না সাবেকি, এই লড়াই তো রয়েছেই। পুজোর জনপ্রিয়তা বাড়াতে ভরসা এখন ই- প্রচারও। পুজো যত এগিয়ে আসছে, ই- প্রচার ততই জমে উঠছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement