Nishikanta Mondal

নন্দীগ্রামের নিশিকান্ত খুনে বেকসুর খালাস আট অভিযুক্তই, ১৪ বছর আগের সেই মামলায় রায় আদালতের

২০০৯ সালে নিশিকান্ত খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। জনশ্রুতি, নিশিকান্ত খুন হওয়ার পর লালগড়ে পোস্টার পড়ত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৫১
Share:

নিশিকান্ত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

২০০৯ সালে নন্দীগ্রামে খুন হয়েছিলেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির প্রথম সারির নেতা নিশিকান্ত মণ্ডল। ভরসন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় নিজের বাড়ি থেকে সামান্য দূরে তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান নিশিকান্তকে গুলি করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, মাওবাদীরা তাঁকে খুন করেছিলেন। তদন্ত উঠে আসে তেলেগু দীপক, মধুসূদন মণ্ডল-সহ আট জনের নাম। পুলিশি তদন্তে সেই আট জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে মামলার শুনানিও শুরু হয়। কিন্তু উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে মামলার সকল অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করল আদালত। শনিবার হলদিয়া মহকুমা আদালত এই রায় দিয়েছে বলে আসামী পক্ষের আইনজীবী বিমল মাজি জানিয়েছেন।

Advertisement

বিমল বলেন জানান, ‘‘নিশিকান্ত মণ্ডলকে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। অভিযুক্তদের মধ্যে রীনা প্রধান, বাসুদেব মণ্ডল, ভীম পাত্র, তেলেগু দীপক, শুভ দাস, মধুসূদন মণ্ডল এবং আরও এক ব্যক্তির নাম উঠে আসে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩০২ এবং অস্ত্র আইনের ২৭ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের হয়। পরবর্তী কালে মামলার শুনানি চলাকালীন একাধিক সাক্ষ্য প্রমাণ তুলে ধরা হয়। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ঘটনার জুতসই কোনও তথ্য প্রমাণ তুলে ধরতে পারেননি তদন্তকারীরা।’’

২০০৯ সালে নিশিকান্ত খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। জনশ্রুতি, নিশিকান্ত খুন হওয়ার পর লালগড়ে পোস্টার পড়ত। লাল কালিতে লেখা থাকত— ‘বিশ্বাসঘাতক নিশিকান্ত মণ্ডলকে শাস্তি দেওয়া হল’। এর পর থেকেই গোটা ঘটনায় মাওবাদী যোগ উঠে আসে। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন নিশিকান্ত। পরে ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে জিতে সোনাচূড়ার প্রধান হন নিশিকান্ত। শোনা যায়, সেই সময় মাওবাদীদের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। এর পরেই ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর খুন হন নিশিকান্ত। পরিবার সূত্রে খবর, ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ পঞ্চায়েত প্রধানকে ফোন করে তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসার জন্য বলেন কেউ। সেই ফোন পেয়েই নিজের মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন নিশিকান্ত। বাড়ি থেকে কিছুটা আসার পর পঞ্চায়েত অফিসের সামনেই ফাঁকা রাস্তায় বাইক আটকে পর পর চারটে গুলিতে তাঁকে ঝাঁজরা করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ছিল। গুলির আওয়াজ শুনে স্থানীয়েরা ছুটে এসে নিশিকান্তকে উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে সেই ঘটনার এত বছর পর অভিযুক্তেরা বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়ায় নিশিকান্তের পরিবার রীতিমতো হতাশ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন