ভাইকে খুনের ঘটনার প্রায় এক মাস পরে ধরা পড়ল অভিযুক্ত দাদা। সোমবার মানস পাত্র নামে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার ধৃতকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হবে।
ঘটনাটি গত ২২ জুনের। ওই দিন রাতের অন্ধাকারে খুন হন বছর চব্বিশের গণেশ পাত্র। গুরুতর জখম হন গণেশের বৃদ্ধা মা কল্পনাদেবীও। ঘটনার পরই বাড়ি থেকে চম্পট দেন কল্পনাদেবীর বড় ছেলে মানস। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, আর পাঁচটা দিনের মতো ওই দিনও একই ঘরে ঘুমোন মানস এবং মানসের ভাই গণেশ। মা কল্পনাদেবী ঘুমোন বাড়ির উঠোনে। বছর কয়েক আগে মারা যান কল্পনাদেবীর স্বামী। সামান্য জমি রয়েছে। সেই জমি চাষ করেই সংসার চলে। বাড়িতে গরু- ছাগলও পালন করেন বৃদ্ধা। দুই ছেলের মধ্যে মানস মানসিক ভারসাম্যহীন। কোনও কাজ করতেন না। গণেশের অবশ্য সাইকেল মেরামতির দোকান ছিল। রাউতোড়াতে বাড়ির কিছু দূরে তিনি দোকান করেছিলেন। কল্পনাদেবী রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে গরু- ছাগলগুলোকে ছেড়ে দিতেন। ওই দিন প্রতিবেশীরা দেখেন, সকাল সাতটার পরও গরু- ছাগলগুলো বাঁধা অবস্থায় রয়েছে। এটা দেখেই সন্দেহ হয়। পরে খবর পেয়ে এক আত্মীয়া বাড়িতে ঢুকেই চমকে ওঠেন। চিত্কার জুড়ে দেন। চিত্কার শুনে অন্যরা ছুটে আসেন।
দেখা যায়, একটি ঘরের খাটে পড়ে রয়েছে গণেশের দেহ। মাথা ফেটে তখনও রক্ত ঝরছে। উঠোনে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন কল্পনাদেবী। তাঁরও মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ সন্দেহ করে, রাতের অন্ধকারে ভাইকে খুন করে বাড়ি থেকে চম্পট দেন মানস। পালানোর আগে নিজের মাকেও খুন করার চেষ্টা করেন তিনি। ভাই এবং মা দু’জনের মাথাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। শ্বাসরোধ করার চেষ্টাও হয়ে থাকতে পারে। মানস হয়তো মনে করেছিলেন, মায়েরও আর প্রাণ নেই। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই রাতের অন্ধকারে তিনি বাড়ি থেকে চম্পট দেন। এমন নৃশংস ঘটনার পরও বাড়িতে কেউ কোনও চিত্কার করল না, তাও ভাবিয়েছিল পুলিশকে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করে, ভাই- মা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখনই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই যুবক। কল্পনাদেবীর বাড়ির শালবনি থানার রাউতোড়ায়। সোমবার সকালে বাঁধগড়ায় মানসকে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।