ভাইকে খুন করে চম্পট দিল দাদা

রাতের অন্ধকারে ভাইকে খুন করে বাড়ি থেকে চম্পট দিল দাদা। পালানোর আগে নিজের মাকেও খুন করার চেষ্টা করেন তিনি। ঘটনাটি শালবনি থানার রাউতোড়ার। অভিযুক্ত যুবক মানস পাত্র মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। রবিবার গভীর রাতে ওই যুবক বাড়ি থেকে চম্পট দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০০:৩৪
Share:

রাতের অন্ধকারে ভাইকে খুন করে বাড়ি থেকে চম্পট দিল দাদা। পালানোর আগে নিজের মাকেও খুন করার চেষ্টা করেন তিনি। ঘটনাটি শালবনি থানার রাউতোড়ার। অভিযুক্ত যুবক মানস পাত্র মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। রবিবার গভীর রাতে ওই যুবক বাড়ি থেকে চম্পট দেন। সোমবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। মৃত ভাই গণেশ পাত্রের (২৪) দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় মাকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই ভর্তি করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “অভিযুক্ত যুবক পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে।”

Advertisement

আর পাঁচটা দিনের মতো রবিবার রাতেও একই ঘরে দাদার সঙ্গে ঘুমোতে যান গণেশ। মা কল্পনাদেবী ঘুমোন বাড়ির উঠোনে। বছর কয়েক আগে মারা যান কল্পনাদেবীর স্বামী। তাঁদের সামান্য জমিও রয়েছে। জমিতে চাষ করেই চলে সংসার। দু’ছেলের মধ্যে মানস মানসিক ভারসাম্যহীন। সে কোনও কাজও করত না। গণেশের অবশ্য সাইকেল মেরামতির দোকান ছিল। রাউতোড়াতে বাড়ির কিছু দূরে তিনি দোকানও করেছিলেন।

কল্পনাদেবী রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ি থেকে গরু-ছাগলগুলোকে বাইরে ছেড়ে দেন। এ দিন প্রতিবেশীরা লক্ষ্য করেন, সকাল সাতটার পরও গরু- ছাগলগুলো বাঁধা অবস্থায় রয়েছে। তা দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। পরে খবর পেয়ে এক আত্মীয়া বাড়িতে ঢুকে দেখেন একটি ঘরের খাটে পড়ে রয়েছে গণেশ পাত্রের দেহ। তাঁর মাথা ফেটে তখনও রক্ত ঝরছে। উঠোনে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন কল্পনাদেবী। তাঁরও মাথা ফেটে গিয়েছে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। খবর পেয়ে পিঁড়াকাটা ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ দিন দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়েছে। কল্পনাদেবীদের আত্মীয়া গঙ্গা মণ্ডলের কথায়, “মানস এমন করতে পারে ভাবতেই পারছি না। ওর মাথাটা একটু খারাপ ছিল। মাঝে-মধ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত। কিন্তু ও ভাইকে এ ভাবে খুন করল কেন বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে একটি গরু বিক্রি করেছিলেন কল্পনাদেবী। সেই গরু বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বচসা হয়। তবে তার পরিণতি এমন হতে পারে বলে বিশ্বাসই করতে পারছেন না পরিজনেরা। গঙ্গাদেবী বলেন, “একটা গরু বিক্রি হয়েছিল বলে শুনেছি। হয়তো দুই ভাইয়ের সামান্য বচসা হয়ে থাকতে পারে। তা বলে খুন! ভাবতে পারছি না।”

খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত, ভাই ও মা দু’জনের মাথাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করার চেষ্টাও হয়ে থাকতে পারে। মানস হয়তো মনে করেছিলেন, মায়েরও আর প্রাণ নেই। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই রাতের অন্ধকারে ওই যুবক বাড়ি থেকে চম্পট দেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, ভাই- মা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখনই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন