অভিযুক্ত অশোক সামন্ত। নিজস্ব চিত্র
এক কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে এক প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করল পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, ওই কিশোরী মানসিক ভারসাম্যহীন। ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, নির্যাতিতা ওই কিশোরী পাঁশকুড়ার খণ্ডখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কিশোরীর তিন দিদির আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে সে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে। তার বাবা বিড়ি শ্রমিক। প্রতিদিন সকালে তিনি হাওড়ায় একটি বিড়ি কারখানায় কাজে চলে যান। আর কিশোরীর মা কম শুনতে পান বলে দাবি। মেয়েটির বাড়িটি গ্রামের পাড়া থেকে একটু দূরে ফাঁকা এলাকায়। কিশোরীর বাড়িতে একা থাকার সুযোগে অশোক সামন্ত নামে স্থানীয় এক মুদি দোকানি তাকে গত এক বছর ধরে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
কিশোরী পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, সন্ধ্যাবেলায় যখন তার মা রান্নাঘরে রান্না করতেন, তখন একাকীত্বের সুযোগ নিয়ে মুখে চাপা দিয়ে অভিযুক্ত অশোক তাকে ধর্ষণ করত। ঘটনার কথা অন্যকে জানালে তার প্রাণনাশেরও হুমকিও দেওয়া হতো বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, অশোকের দোকানে কিছু কিনতে গেলে সেখানে অন্য লোকজন না থাকলে অভিযুক্ত নিজের বাড়িতে তাকে ধর্ষণ করত। কখনও কখনও পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়েও অশোক তাকে ধর্ষণ করত বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন ওই নির্যাতিতা।
কিশোরীর পরিবার সূত্রের খবর, এক বছর আগেও নির্যাতিতা নাবালিকা ছিল। এখন সে সাবালিকা হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর শারীরিক পরিবর্তন ধরা পড়ায় বাড়ির লোকজন তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তখনই জানা যায় ওই মেয়েটি ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এর পরেই নির্যাতিতা তাঁর পরিজনদের অশোকের কার্যকলাপের কথা বলে। মঙ্গলবার পাঁশকুড়া থানায় অশোকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। সেই অভিযোগে ভিত্তিতে পুলিশ অশোককে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অশোকের দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে ওই দোকান বাড়িতেই থাকে সে। অশোক। তার এই ঘটনা সামনে আসার পরেই এলাকার আরও অনেকে সরব হয়েছেন। নির্যাতিতার এক বান্ধবী এ দিন বলেন, ‘‘ওর দোকানে গেলে ও একাধিকবার অশ্লীল আচরণ করেছে।’’ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, এর আগেও অশোক এলাকার মেয়েদের সঙ্গে অসভ্যতা করেছে। সে বার পাড়ার অন্যেরা তাকে সতর্ক করেছিল। প্রতিবেশীদের দাবি, তখন ভুল স্বীকার করেছিল অশোক। এই কাণ্ড ঘটানোয় তাঁরা এখন অশোকের শাস্তির দাবি করেছেন।
পাঁশকুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। এ দিনই নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। ধৃত অশোককে আজ, বুধবার তমলুক আদালতে তোলার কথা।