হাতিসুমারিতে গিয়ে নিজস্বীতে না

হাতিসুমারি শুরুর আগে কর্মশালা হল মেদিনীপুরে। মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর ডিএফও অফিসে আয়োজিত কর্মশালায় বন দফতরের কর্মীরা ছাড়াও তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ৮৮ জন যোগ দিয়েছিলেন।

Advertisement

সৌমেশ্বর মণ্ডল

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০০:৪৮
Share:

হাতিসুমারি শুরুর আগে কর্মশালা হল মেদিনীপুরে। মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর ডিএফও অফিসে আয়োজিত কর্মশালায় বন দফতরের কর্মীরা ছাড়াও তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ৮৮ জন যোগ দিয়েছিলেন। হাতিসুমারিতে কী ভাবে কাজ করতে হবে, কোন কোন কাজ করা যাবে না, এ দিন সে বিষয়ে কর্মীদের বোঝান আধিকারিকরা। উপস্থিত ছিলেন চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট (সিসিএফ) নীরজ সিঙ্ঘল।

Advertisement

শেষবার হাতিসুমারি হয়েছিল ২০১০ সাল। বর্তমানে হাতির সংখ্যা জানার লক্ষ্যে ভারত সরকারের ‘প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট’-এর অধীনে ফের ওই সুমারি হবে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও ছত্তীশগঢ়ে সুমারি হবে আগামী ৯-১২ মে। বন দফতর সূত্রে খবর, হাতি রয়েছে এমন প্রতি পাঁচ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় সুমারির জন্য একটি করে দল গঠন করা হবে। প্রতিটি দলে চারজন করে থাকবেন।

মঙ্গলবারের কর্মশালায় কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেন ডিএফও (মেদিনীপুর) রবীন্দ্রনাথ সাহা ও ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণব সেনগুপ্ত। হাতিসুমারি চলাকালীন কয়েকটি বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় কর্মশালায়। ঝলমলে রঙিন জামাকাপড় পরে জঙ্গলে না যাওয়া, দলের প্রধানের কথা মেনে কাজ করা, অযথা ঝুঁকি না নেওয়া, সেলফি না তোলার মতো কয়েকটি বিষয় জানানো হয় সকলকে। সুমারির কাজ করার সময় মোবাইল ‘সাইলেন্ট মোড’-এ রাখার কথাও বলা হয়। কর্মশালায় আরও জানানো হয়, হাতি পুরুষ না মহিলা বুঝতে না পারলে ঝুঁকি নিয়ে সামনে যাওয়া যাবে না। সমীক্ষার কাগজে ভুল না লেখার আবেদনও জানানো হয়। সিসিএফ নীরজ সিঙ্ঘল বলেন, ‘‘এখন দক্ষিণবঙ্গে হাতির সংখ্যা বেড়েছে। শেষবারের সুমারি অনুযায়ী দক্ষিণবঙ্গে হাতির সংখ্যা ছিল ১১৮টি। এ বার সেই সংখ্যা বাড়বে। অনুমানিক ১৭৫-২০০ টি হাতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিসুমারি শুরুর আগে আগামী ৯ মে দলের সকলে এক জায়গায় মিলিত হবে। ওই দিন সুমারির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র (দূরবীন, কম্পাস, ক্যামেরা, জিপিআরএস) তাঁদের হাতে দেওয়া হবে। ১০ মে দলের সদস্যরা জঙ্গলে যাবেন।

কয়েকটি ভাগে হবে হাতিসুমারির কাজ। সমীক্ষার প্রথম দিনে হবে ‘এলিফ্যান্ট ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপিং’ অর্থাৎ জঙ্গলের মধ্য ঢুকে দূরবীনের সাহায্য হাতির অবস্থান দেখার কাজ। তারপরে শুরু হবে গণনা ও হাতির ছবি তোলার কাজ। দ্বিতীয় দিন হবে ‘ফিক্স স্পট সাইটিং’। এর মাধ্যমে জঙ্গলের যে সব জলাশয়ে হাতি জল খেতে আসে সেখানে হাতির সংখ্যা গোনা ও ছবি তোলা হবে। সমীক্ষার শেষদিনে হবে ‘ডাঙ্গ কাউন্টিং মেথ্‌ড’। এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে হাতির মলের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

সুমারির তিনদিনে জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা যাবতীয় তথ্য ও ছবি সমীক্ষকেরা জমা দেবেন বন দফতরের কার্যালয়ে। সংগৃহীত তথ্য, ছবি ও মলের নমুনা বিশেষজ্ঞদের কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পরীক্ষার পর হাতির সংখ্যা জানাবেন বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন