মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মাঝেই লালগড়ে হাতির হানা

প্রশাসনিক বৈঠকে ওই কথোপকথনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লালগড়ে হানা দিয়ে হাতির দল বুঝিয়ে দিল, তারা আছে, স্বমহিমাতেই আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৯
Share:

ফাইল ছবি।

প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গলমহলের একজন ডিএফও মঙ্গলবারই বলেছিলেন, “এলাকায় হাতি নাই।” তা শুনে বিষম চটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জবাব দেন, “হাতি নাই মানে! রোজ গ্রামে ঢুকে হাতির দল ফসল খেয়ে নিচ্ছে আর আপনি বলছেন, হাতি নাই।”

Advertisement

প্রশাসনিক বৈঠকে ওই কথোপকথনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লালগড়ে হানা দিয়ে হাতির দল বুঝিয়ে দিল, তারা আছে, স্বমহিমাতেই আছে।

মঙ্গলবার রাতভর লালগড়ের বিভিন্ন গ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে দলমার পাল। স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেই লালগড় থেকে দলমার পালের ৭০-৮০টি হাতিকে নয়াবসত রেঞ্জের দিকে খেদিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে থাকা আরও ২৫টি হাতিকে মেদিনীপুরের চাঁদড়ার দিকে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধে হতেই ওই ২৫টি হাতির দল চাঁদড়ার দিক থেকে লালগড়ে ঢুকে পড়ে। রাঙামেটা গ্রামের ধানখেতের বেশ খানিকটা ফসল সাবাড় করে দেয় হাতিরা। এরপর গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে রাতভর হাতির দলটি করমশোল, পূর্ণাপাণি, দুর্লভপুর, তাড়কি গ্রামের ধানখেতে তাণ্ডব চালায়। বুধবার ভোরে হাতির দলটি দু’ভাগ হয়ে তাড়কি ও রাঙামেটার জঙ্গলে ঘাঁটি গাড়ে। এ দিন সন্ধেতেও হাতিগুলি ফের লোকালয়ে ঢুকে চাষের জমিতে নেমে পড়েছে বলে খবর।

Advertisement

রাঙামেটার চাষি সঞ্জয় মাহাতো, লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো, ভীমচন্দ্র মাহাতো, পূর্ণাপাণি গ্রামের সন্দীপ মাহাতো, ভূপেন চৌধুরী, অঞ্জন মাহাতোদের অভিযোগ, কয়েকদিন আগেই হাতির পাল এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ওই হাতিগুলি অন্যত্র চলে গেলেও এখন নতুন হাতির দল চলে আসায় চাষিদের মাথায় হাত। এক সপ্তাহ পরেই জঙ্গলমহলের মূলবাসীদের কৃষি উত্সব বাঁদনা পরব। কিন্তু হাতির তাণ্ডবে সকলে উদ্বিগ্ন। বাড়ছে ক্ষোভও। রাঙামেটা গ্রামের সঞ্জয় মাহাতো, লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো, ভীমচন্দ্র মাহাতো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বলার পরেও এলাকায় হাতি ঢোকা আটকাতে ব্যর্থ বন দফতর। মাঠের সব ফসল শেষ। আমরা কোথায় যাব!”

ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা বলেন, “দ্রুত সমস্যা মেটানোর জন্য বন দফতরের সঙ্গে কথা বলছি।” মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “হাতিগুলি কিছুতেই দলমায় ফিরতে চাইছে না। আমরা স্থানীয় বাসিন্দা, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে হাতির পালকে দলমায় ফেরানোর চেষ্টা করছি।” রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, কেবলমাত্র লালগড় রেঞ্জে মাত্র তিনদিনের মধ্যে ক্ষতির পরিমাপ করে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন