Jobs: যোগ্যতা অনুযায়ী কাজও তো অধিকার

ছোটবেলায় শোনা সংবিধানের দেওয়া অধিকারের কথা এখন সোনার পাথর বাটি মনে হয়।

Advertisement

শেখ সাদেক আলি

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

জানেন, বাবা-মার খুব ইচ্ছা ছিল আমি শিক্ষক হই। ছোট থেকে আমারও সেই ইচ্ছা ছিল।

Advertisement

ছোটবেলায় স্কুলে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান হত। শিক্ষকেরা পতাকা উত্তোলন করতেন। বক্তৃতা করতেন। তখনই শুনেছি ২৬ জানুয়ারি দিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরে জেনেছি, এই দিন দেশ পেয়েছিল সংবিধান। সেই সংবিধান দেশের সাধারণ মানুষের অধিকারের রক্ষাকবচ।

কিন্তু সত্যি বলতে করোনার কাল এবং সাম্প্রতিক গত কয়েক বছরে যা দেখছি এবং অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তাতে মনে একটা প্রশ্ন জাগে— সত্যি কি তাই! তাহলে দেশের নাগরিক হিসেবে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের অধিকার, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জীবনের অধিকার কেন পাব না আমরা!

Advertisement

২০১৭ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় স্নাতকোত্তর। ২০১৯-এ বিএড সম্পূর্ণ করি। ২০২১ থেকে পিএইচডি করছি। কিন্ত শিক্ষকতার সুযোগ কই! রাজ্যে সরকারি চাকরি নেই। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা বন্ধ। আমার দাদা শেখ সাবির আলি চেন্নাইয়ে মার্বেল, টাইলসের ব্যবসা করেন। বাবা ওই ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করতেন। দাদার একার আয়েই উপরেই আমাদের পরিবারের পাঁচজন সদস্য নির্ভরশীল। আমার পড়াশোনার সমস্ত খরচও এতদিন দাদাই চালিয়ে এসেছে। কিন্তু ২০২০ সালে লকডাউন শুরু হওয়ার পর দাদার ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। আর্থিক ভাবে খুবই ধাক্কা খেয়েছি। বাধ্য হয়ে বাবা বাড়িতে ফিরে আসেন।

আমার স্বপ্ন ছিল শিক্ষকতা করে পরিবারের কষ্ট লাঘব করব। কিন্তু তা আর হল না। এম এ পাস করার পর স্কুল সার্ভিস কমিশনের একটি পরীক্ষাও হয়নি। নিজের যোগ্যতা যাচাইয়েরও সুযোগ মেলেনি। পরিবার থেকে পড়াশোনার খরচ নিতে লজ্জা করে। তাই এখন টিউশনি করি।

প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবস কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার পালন করে। কিন্তু আমাদের সার্বিক সুরক্ষা কই! কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও সুনির্দিষ্ট কর্মসংস্থানের দিশা দেখাতে পারেনি। ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষিত যুবক যুবতীরা বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

আমাদের দেশের গণতন্ত্রের মূল কথাই হল— নাগরিকের খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা। কোভিড কালে সরকার এই দায়িত্ব পালনে অনেকখানি ব্যর্থ। আর ছোটবেলায় শোনা সংবিধানের দেওয়া অধিকারের কথা এখন সোনার পাথর বাটি মনে হয়।

শিক্ষিত বেকার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন