রেকর্ড ভিড় টেনে শেষ মেলা

শেষবেলায় রেকর্ড ভিড় টেনে শেষ হল রাজ্য হস্তশিল্প মেলা। রবিবার শেষ সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের মেলা চত্বরে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। দেদার বিকিকিনি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

ক্ষতবিক্ষত: পরের পর জনসভা আর মেলার গুঁতোয় এমনই হাল মেদিনীপুরের কলেজ-কলেজিয়েট মাঠের। অথচ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ লক্ষ টাকায় এই মাঠ সংস্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন। নিজস্ব চিত্র

শেষবেলায় রেকর্ড ভিড় টেনে শেষ হল রাজ্য হস্তশিল্প মেলা। রবিবার শেষ সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের মেলা চত্বরে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। দেদার বিকিকিনি হয়েছে। জেলা শিল্পকেন্দ্রের এক কর্তার আক্ষেপ, “বাঁশের দু’টো চেয়ার কিনব বলে আগেই দেখে রেখেছিলাম। রবিবার সন্ধ্যাতেও ছিল চেয়ার দু’টো। পরে কিনতে গিয়ে দেখি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আমিও বুঝিনি শেষ দিনে এত ভিড় হবে।”

Advertisement

১৬ দিনের এই মেলার প্রায় সবদিনই ছিল জমজমাট। তবে শেষ দিনের ভিড় সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। শেষবেলায় মেলায় আসা গৃহবধূ নমিতা সামন্ত থেকে কলেজ পড়ুয়া রোনিয়া রায়, সকলেই মানছেন, “এ বার মেলার অভিজ্ঞতা দারুণ। এক জায়গান নানা ধরনের হস্তশিল্প সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে।” একই মত সুজাতা কয়াল, সুমনা ভট্টাচার্যদের। সুজাতার কথায়, “মেলা থেকে অনেক কিছু কিনেছি। আবার কবে এমন মেলা বসবে কে জানে!”

এর আগে শেষ ২০১১ সালে মেদিনীপুরে এমন রাজ্যস্তরের হস্তশিল্প মেলা হয়েছিল। সে বার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার জিনিস বিক্রি হয়েছিল। জেলা শিল্পকেন্দ্রের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এ বার নতুন রেকর্ড হয়েছে। আগের বারের থেকে বিক্রি অনেক বেড়েছে। তাঁর কথায়, “মেলার শেষ তিন দিনে সব থেকে বেশি ভিড় হয়েছে। এখনও সব হিসেব করা হয়নি। তবে প্রাথমিক যা হিসেব তাতে বিক্রি সাড়ে ৩ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।” নোট বাতিলের পরে মানুষের হাতে যেখানে খুচরোর জোগান কমেছে, সেখানে এত ভাল ব্যবসা হওয়ায় খুশি বিভিন্ন জেলা থেকে মেলায় আসা শিল্পীরাও। অনেকেই বলছেন, ‘‘এখানে এসে যে এই বাজার পাবেন তা সত্যি ভাবিনি।” প্রতিটি স্টলে কার্ডে কেনাকাটার বন্দোবস্ত ছিল। ছিল পেটিএমের ব্যবস্থা। ফলে, মেলা এগিয়েছে ছন্দে।

Advertisement

এই ক’দিন রাত ন’টা বাজলেই বাঁশি বাজানো শুরু করতেন মেলার নিরাপত্তারক্ষীরা। লোকজনকে মেলার মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করতেন। জানাতেন, এ বার মেলার ঝাঁপ বন্ধ হবে। রবিবার রাতে অবশ্য বাঁশি বাজেনি। ন’টা- দশ’টা নয়, রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বিকিকিনি চলেছে! জেলা শিল্পকেন্দ্রের ওই কর্তার স্বীকারোক্তি, “শেষবেলার হুল্লোড় সত্যিই চোখে পড়ার মতো ছিল। মেলা যেন শেষই হতে চাইছিল না।”

শেষের সুরেই যেন মিশে ছিল শুরুর গন্ধ। নদিয়া থেকে আসা শিল্পীদের স্টলে গিয়ে একজনকে বলতেও শোনা গেল, ‘আপনারা আবার সামনের বছর আসবেন তো? আমরা কিন্তু অপেক্ষায় থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন