তখনও নেভেনি আগুন। নারায়ণগড়ের তুতরাঙা গ্রামে। ফাইল চিত্র।
দেহ নিতে রাজি নয় মৃতের পরিবার। তাই বাজি তৈরি করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় সমস্যায় পড়েছে প্রশাসন।
রবিবার নারায়ণগড়ের নারমা গ্রাম পঞ্চায়েতের তুতরাঙা গ্রামে বেআইনি বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় রূপকুমার আদকের। ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছাড়া তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী বর্ণালি। প্রথম স্ত্রী আরতির সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল না রূপকুমারের। তাই মৃতদেহ নিতে রাজি নন তাঁরা। পরিবারের তরফে এ ব্যাপারে লিখিত ভাবে থানায় জানানোও হয়েছে। কেন এই সিদ্ধান্ত? বাজি বিস্ফোরণে মৃতের দাদা সুকুমার আদক বলেন, ‘‘বহুদিন ধরে ভাই বাইরে থাকত। বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিয়ে করে। আমরা মানিনি। কোনও সম্পর্ক রাখেনি। দেহ নিয়ে কী করব? কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাই না।’’
দেহ নিতে গ্রামবাসীদের তরফে পরিবারকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তাতেও অনড় পরিবার। গ্রামবাসী নির্মল ধাড়া বলেন, ‘‘দাদাদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় মৃতদেহ বাড়ির কেউ নিতে চাইছে না। শেষ পর্যন্ত কী হয় দেখা যাক।’’ নারায়ণগড় থানার পুলিশ অর্ধেক পুড়ে যাওয়া রূপকুমারের দেহ সোমবার ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, পরিবারের লোকজনকে বোঝানো চলছে। দেহ না নিতে চাইলে অন্য ব্যবস্থার কথা ভাবা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাজি তৈরি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রূপকুমার। আগে বাজি ফাটাতে গিয়ে ডান হাত খুইয়েছিলেন। গ্রামবাসীরা বারণ করলেও শোনেননি। পরেও বেআইনি শব্দবাজি তৈরির কাজ চলত। বাজি প্রদর্শনীর জন্যও অর্ডার আসত। গ্রামের একদিকে মাঠের প্রান্তে ফাঁকা জায়গায় বাড়ি করে থাকতেন। সেই বাড়িতেই পুলিশের নজর এড়িয়ে চলত বাজির কারবার। বিস্ফোরণে বাড়িটি উড়ে গিয়েছে। তাঁর দাদার বক্তব্য, ‘‘গ্রামে থাকি। পুরোহিত যেমন বিধান দেবেন ততটুকুই লোকাচার মানব। ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’