প্রতীকী ছবি।
খুন হয়েছিলেন পান ব্যবসায়ী বিভুরঞ্জন দাস। অস্থায়ী চাকরি পেয়েছেন তাঁর ছেলে রাজকুমার। সোমবার কেশিয়াড়িতে প্রশাসনিক জনসভা থেকে তার উল্লেখও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু কাটেনি আতঙ্ক। খাজরার নিহত পান ব্যবসায়ীর পরিবারের একটাই চাওয়া, জীবনটা নিরাপদ হোক।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভায় দেখা যায়নি বিভুরঞ্জনের স্ত্রী সোমা অথবা ছেলে রাজকুমারকে। সভায় কেন এলেন না? বুধবার সীমা বললেন, ‘‘ভয় এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে। কোথাও বেরোতে ভয় লাগে।’’ বিভু-সোমার তিন সন্তান। দুই মেয়ে, এক ছেলে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বাবার মৃত্যুর পর আর ফিরে যাননি সেখানে। গত ১৪ নভেম্বর ব্যবসায়ীর পরিবার নবান্নে যায়। পরিবার সূত্রে খবর, নবান্নেই প্রথম রাজকুমারকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পরে মেদিনীপুর ব্লক অফিসে একটি অস্থায়ী কাজ দেওয়া হয়েছে। রাজকুমার বলেন, ‘‘মাসিক দশ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পেয়েছি। অস্থায়ী। একবছর কাজের পর স্থায়ী করার কথা বলা হয়েছে।’’ চাকরি হয়েছে। কিন্তু বাবার খুনে দোষীরা ধরা পড়েনি। মন ভাল নেই রাজকুমারের। তাঁর কথায়, ‘‘বেঙ্গালুরুতে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতাম। সেখানে এর চেয়ে বেশি বেতন পেতাম। বাবাকে হারিয়েছি। কোনও কিছুর বিনিময়ে কী আর সন্তুষ্ট হওয়া যায়!’’ সোমাও চাইছেন, দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হোক। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি সাহায্য থেকেই চালাতে হচ্ছে। মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ তো কিছু হয় না। বাকি জীবন নিরাপদ হোক।’’ খাজরার বাড়িতে থাকতে ভয় করে। তাই ছেলেকে নিয়ে মেদিনীপুরে বাপের বাড়িতেই থাকেন সোমা। পরিবার আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর ওপর আস্থাই রাখছে। রাজকুমারের দাবি, ‘‘বাবার খুনিরা শাস্তি পাক। পুলিশ তাদের খুঁজে বের করুক। রাজ্য সরকারের উপর আমাদের আস্থা আছে।’’ অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’
বিজেপির ডাকা বন্ধের দিন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দোকানে থাকাকালীন দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন বিভুরঞ্জন। ঘটনার পর তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। বিজেপির দিকে আঙুল তুলে বিভুর়ঞ্জনকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। পরিবারের দাবি ছিল, বিভুরঞ্জন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বিজেপিও এই ঘটনায় দায় চাপিয়েছিল শাসক দলের দিকে। বিভুরঞ্জনের পরিবারকে সাহায্য ও চাকরির ব্যবস্থা করেছে সরকার। এখনও খুনের কিনারা করতে
পারেনি পুলিশ।