অনেক শহিদ পরিবারই এখনও আঁধারে ডুবে। অর্থ সাহায্য থেকে কর্মসংস্থান, কিছুই জোটেনি। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে তাই পশ্চিম মেদিনীপুরের সেই সব বঞ্চিত শহিদ পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভ জানালেন তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে।
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, গত শুক্রবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন শহিদ পরিবারের সদস্য। এঁদের বেশিরভাগই কেশপুর-গড়বেতার বাসিন্দা। সিপিএমের আমলে এঁদের পরিজনেরা খুন হয়েছিলেন। মেদিনীপুরে এসে তাঁরা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির সঙ্গে দেখা করে নিজেদের সমস্যা জানান। সঙ্গে উগরে দেন ক্ষোভ। শহিদ পরিবারের এক সদস্য যেমন বলেন, “সেই সময়ে যারা সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি, তারাই আজ নেতা। কাগুজে ওই নেতারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। আমাদের মতো পুরনো দিনের কর্মীদের পরিবারের দিকে দেখার সময় কোথায়!” আর একজন বলেন, “গ্রামে এতগুলো ইন্দিরা আবাসের ঘর হল। অথচ আমাদের ভাগ্যে একটাও জুটল না।”
শুক্রবার বিকেলে মেদিনীপুরে অজিতবাবুর সঙ্গে দেখা করতে আসা ওই দলে ছিলেন শ্যামল আচার্য। শ্যামলের বাবা অজয় আচার্যকে ২০০২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সিপিএমের লোকেরা গুমখুন করে বলে অভিযোগ। রাজ্যে পালাবদলের পরে দাসেরবাঁধ থেকে মাটি খুঁড়ে হাড়গোড় মেলে। ওই মামলাতেই নাম জড়িয়েছে সুশান্ত ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। মেদিনীপুরে এসে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবুর সঙ্গে দেখা করার কথা মানছেন শ্যামল। তাঁর কথায়, “দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছি। এতদিনেও যে কিছু পাইনি তাই জানিয়েছি।”
দিন কয়েক আগেই জেলায় এসে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী দলের অন্দরে বার্তা দিয়েছিলেন, ‘‘মানুষের যা পাওনা তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’’ তারপরেই শহিদ পরিবারের সদস্যদের এই ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসায় এখন প্রবল অস্বস্তি জেলা তৃণমূলে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “কারও কারও মনের মধ্যে দুঃখ-বেদনা রয়েছে। বিষয়টির দিকে দলের নজর রয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপও করা হয়েছে।”