—প্রতীকী ছবি।
আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়েও ফসল বিমায় আবেদন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ার অভিযোগ তুললেন কৃষকরা।
চলতি ২০১৮-’১৯ রবি মরসুমে বাংলা ফসল বিমা যোজনায় কৃষকদের আবেদনের জন্য গত নভেম্বর মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য। জেলায় সেই বিজ্ঞপ্তি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এসে যায় বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ৩১ ডিসেম্বর। অথচ রাজ্যের প্রায় অধিকাংশ জেলায় সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র দিন দশেক আগে বিমা সংস্থাগুলি আবেদন জমা নেওয়ার কাজ শুরু করার বিষয়ে লিখিতভাবে জানায় কৃষিদফতরের অফিসগুলিতে। চাষিরা তা জানতে পারেন আবেদনে শেষ তারিখের দিন পাঁচেক আগে। এর ফলে যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করে আবেদন করতে সময় না পাওয়ায় বহু চাষিই আবেদন করতে পারেননি বলে অভিযোগ।
চাষিদের ফসল বিমা যোজনায় আবেদন করতে না পারার বিষয়ে কৃষক সংগ্রাম পরিষদের তরফে জেলা শাসক ও জেলা কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। গত ১৭ জানুয়ারি আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর কথা ঘোষণা করা হয়। অভিযোগ, মাস শেষ হতে চললেও এখনও জেলার বহু ব্লকেই দেখা মেলেনি বিমা সংস্থার কর্মী ও আধিকারিকদের। ফলে কৃষকরা দিনের পর দিন ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিসগুলিতে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। বিমা কোম্পানির যোগাযোগের ফোন নম্বরগুলি হয় বন্ধ অথবা ব্যস্ত থাকায় তাদের যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে দাবি কৃষকদের।
ঠিক কী কারণে এখনও কাজ শুরু করেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থাটি তার উত্তর জানা নেই কৃষি আধিকারিকদেরও। পাঁশকুড়া ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা স্বপন মাইতি বলেন, ‘‘সরকার আবেদনের মেয়াদ বাড়ানোর পর বিমা সংস্থার কোনও প্রতিনিধি এখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ফলে চাষিরা ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিসগুলিতে এসে হয়রান হচ্ছেন।’’
কোলাঘাটের কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক সুধাংশু হাঁড়া বলেন, ‘‘প্রথমবার বিমা কোম্পানির এজেন্টরা না আসায় আবেদন করতে পারিনি। আবেদনের সময় বাড়ানোর পর ভেবেছিলাম আবেদন করতে পারব। কিন্তু এখনও কাজ শুরু না হওয়ায় সংশয়ে আছি।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিমা সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মনোজ পাণিগ্রাহী বলেন, ‘‘আবেদনের ফর্ম আসতে দেরি হওয়ায় সব জায়গায় কাজ শুরু করাযায়নি। সোমবার থেকে সব জায়গায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘সরকার ও বিমা সংস্থার সমন্বয়ের অভাবেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা চাই সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক।”