খড়গপুরে ব্যবসায়ী খুন

সিবিআই তদন্তের দাবি মৃতের বাবার

ব্যবসায়ী খুনের পর তিন দিন কেটে গিয়েছে। এখনও অধরা অভিযুক্তরা। পুলিশি তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এ বার জয়শঙ্কর সাউ খুনে সিবিআই তদন্ত দাবি করলেন মৃতের বাবা বুধরাম সাউ। তিনি বলেন, “আমার একমাত্র ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে চোখে ঘুম নেই। পুলিশ চাইলে একদিনেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারত। পুলিশি তদন্তের উপর ভরসা রাখতে পারছি না। ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০০:৩৫
Share:

ব্যবসায়ী খুনের পর তিন দিন কেটে গিয়েছে। এখনও অধরা অভিযুক্তরা। পুলিশি তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এ বার জয়শঙ্কর সাউ খুনে সিবিআই তদন্ত দাবি করলেন মৃতের বাবা বুধরাম সাউ। তিনি বলেন, “আমার একমাত্র ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে চোখে ঘুম নেই। পুলিশ চাইলে একদিনেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারত। পুলিশি তদন্তের উপর ভরসা রাখতে পারছি না। ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই।”

Advertisement

ঘটনার দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়ে সোমবার খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশের সুপারের সঙ্গে দেখা করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে রেলশহরের গোলবাজারে আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন জয়শঙ্করবাবু। ঘটনার পরেই খড়্গপুরে ৪৮ ঘণ্টার ব্যবসা বন্‌ধের ডাক দেয় জেলা বণিক সভা। শুক্রবার রাতেই অবশ্য বন্‌ধ প্রত্যাহার করে নেয় তারা। এ দিন বণিক সভার পক্ষ থেকেও খড়্গপুরের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার দাবিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, রেলশহরে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য অব্যাহত। পুরভোটের সময় থেকেই পুলিশের মদতে এই দৌরাত্ম্য বেড়েছে। শহরের এক ব্যবসায়ীর দাবি, ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা চেয়ে প্রায়ই হুমকি ফোন আসছে। জয়শঙ্করবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, মৃত্যুর কয়েকদিন আগে টাকা চেয়ে জয়শঙ্করবাবুর কাছে হুমকি ফোন আসে। যদিও টাকা দিতে অস্বীকার করেন তিনি। তার জেরেই জয়শঙ্করবাবুকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

Advertisement

মৃতের বাবা বুধরাম সাউ বলেন, “ছেলের কোনও শত্রু ছিল না। তাই ওকে কেন মারল বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেক ব্যবসায়ীর কাছে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে শুনছি। এখন মনে হচ্ছে ওকেও হুমকি দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। ভয়ে হয়তো ছেলে কিছুই জানায়নি।” পুলিশের অনুমান, ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই জয়শঙ্করবাবুকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে বাসস্ট্যান্ডের কাছে রেলের একটি জমি ১৫ লক্ষ টাকায় কিনেছিলেন জয়শঙ্করবাবু। ওই জমির সামনেই এক যুবকের ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসা রয়েছে। সেই কারণে জমিতে পাঁচিল দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন জয়শঙ্করবাবু।

এ নিয়ে গোলমাল দেখা দিলে দু’পক্ষই পুলিশের দ্বারস্থ হয়। যদিও সেই সময় পুলিশি মধ্যস্থতায় ওই যুবকের কাছে জয়শঙ্করবাবু জমি বিক্রির প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। তবে এখন জমি বিক্রি হয়নি। যদিও জয়শঙ্করবাবুকে খুনের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই বলে মৃতের পরিবারের লোকেদের দাবি। বুধরামবাবুও বলেন, “বাসস্ট্যন্ডের ওই জমি নিয়ে গোলমাল তো মাস তিনেক আগের কথা। পুলিশি মধ্যস্থতায় সে তো প্রায় মিটেই গিয়েছিল।” বন্‌ধ প্রত্যাহার করে নিলেও সোমবার বণিক সভার পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন