কোয়ার্টারে আগুন, রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ খড়্গপুরে

রাতের অন্ধকারে আগুন লাগল বিপজ্জনক রেল কোয়ার্টারে। শনিবার গভীর রাতে খড়্গপুরের ওল্ড সেটলমেন্ট সংলগ্ন ২ নম্বর রেল কোয়ার্টারের ওয়ান টাইপ কোয়ার্টারে আগুন লেগে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২২
Share:

এই কোয়ার্টারেই লাগে আগুন। নিজস্ব চিত্র।

রাতের অন্ধকারে আগুন লাগল বিপজ্জনক রেল কোয়ার্টারে। শনিবার গভীর রাতে খড়্গপুরের ওল্ড সেটলমেন্ট সংলগ্ন ২ নম্বর রেল কোয়ার্টারের ওয়ান টাইপ কোয়ার্টারে আগুন লেগে যায়। পুড়ে ছাই হয়ে যায় রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার, মোটরবাইক-সহ যাবতীয় সামগ্রী। পড়শিরাই প্রথম আগুন দেখেন। তাঁরা আসার বেশ কিছুক্ষণ পরে ঘুম ভাঙে ওই কোয়ার্টারের বাসিন্দা ট্রেনের চালক ইউ কামেশ্বর রাওয়ের। খবর পেয়ে আসেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারও। পুরসভার ডিপ-টিউবওয়েল চালিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। দরজা ভেঙে বের করে আনা হয় কামেশ্বর ও তাঁর বোনকে। দু’জনই অবশ্য অক্ষত ছিলেন।

Advertisement

ওই কোয়ার্টারে ১৯৮৩ থেকে রয়েছেন কামেশ্বর। কয়েক বছর আগে কোয়ার্টারের সামনের অংশ সম্প্রসারিত করে তিনি একটি ঘর তৈরি করেন। রেলের পরিভাষায় তা হল ‘শেড’। শনিবার রাতে কামেশ্বরের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। ভিতরের ঘরে ছিলেন কামেশ্বর ও তাঁর বোন বি কালিশ্বর আম্মা। রাত একটা নাগাদ পড়শিরা দেখেন কামেশ্বরের কোয়ার্টারের সামনের শেড জ্বলছে। বহু ডাকাডাকিতেও কামেশ্বরের ঘুম ভাঙেনি। ততক্ষণে আগুন ছড়াচ্ছে। আর তাতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে ঘিঞ্জি রেল কলোনিতে। এ দিন কামেশ্বর বলছিলেন, “ঘুমের মধ্যে ঘরে যে এ ভাবে আগুন লেগেছে বুঝতেও পারিনি। প্রায় আধঘন্টা পরে ঘুম ভাঙে। তখন কোয়ার্টার থেকে বেরোনোর পথ খুঁজে পাইনি। পাড়ার লোকেরা আমাকে বের করেছে। নতুন জীবন পেলাম মনে হচ্ছে।”

কী ভাবে এমন আগুন লাগল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। দমকলের খড়্গপুর বিভাগের ওসি রবীন্দ্রনাথ সর্দার বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমাদের দেখে মনে হয়েছে শর্ট-সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল। ওই সব কোয়ার্টারে একটি দরজা। আরও বড় ক্ষতি হতে পারত।” গোটা ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও উঠেছে। রেল কলোনির বাসিন্দাদের দাবি, রেলের আধিকারিকদের কোয়ার্টার ছাড়া অন্য কর্মীদের কোয়ার্টার ধুঁকছে। মথুরাকাটি এমএস টাইপ, নিমপুরা আড়াই নম্বর-সহ বেশ কয়েকটি রেল কলোনিতে প্রাণ হাতে থাকছেন রেলকর্মীরা। পুরপ্রধান প্রদীপবাবুরও বক্তব্য, “রাস্তা, নর্দমা থেকে কোয়ার্টার মেরামতি, কোনও কাজ করছে না রেল।”

Advertisement

১৩ হাজার কোয়ার্টারে ডিভিশনের প্রায় ২৫ হাজার কর্মী থাকেন। কিন্তু পুরনো কোয়ার্টারগুলির মেরামতিতে রেল একেবারে উদাসীন বলে অভিযোগ। রেলের ওয়ার্কস বিভাগের আধিকারিক (নর্থ-ওয়েস্ট) অসীম রায়ের অবশ্য দাবি, “আমার অধীনে সাড়ে ৪ হাজার রেল কোয়ার্টার আছে। আর বছরে ২৫০টি কোয়ার্টার মেরামতির টাকা পাই। তাই আবেদন জমা পড়লে মেরামতিতে দেরি হয়।” আর সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার(ইলেক্ট্রিক্যাল) অজয় করের বক্তব্য, “অনেকে নিজের মতো করে রেল কোয়ার্টার সম্প্রসারিত করে নিচ্ছে। সেখানে মেরামতির দায়িত্ব আমাদের নয়। এ ক্ষেত্রে তেমন অংশেই আগুন লেগেছিল।” তবে এ নিয়ে ডিআরএমকে স্মারকলিপি দেবে বলে জানিয়েছেন মেনস কংগ্রেসের খড়্গপুরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত ভাদুড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন