পোর্টাল বিভ্রাটে তালিকায় বিভ্রান্তি
COVID-19

প্রথম দিনে পাশ স্বাস্থ্য দফতর

এ দিন প্রথমে টিকাকরণ কেন্দ্রে তেমন ভিড় না হলেও বেলা যত বেড়েছে, তমলুক-সহ পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার মোট ৯টি কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিয়েছেন তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক ও কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০১:১৫
Share:

হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে।

সকাল থেকেই তমলুক জেলা হাসপাতালের নার্সিং কলেজ চত্বরে সাজো সাজো রব। মারণ ভাইরাস করোনার প্রতিষেধক দেওয়া হবে যে!

Advertisement

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ভার্চুয়ালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার পর সকাল ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়। তমলুকে জেলা হাসপাতালে কেন্দ্রে প্রত্যাশিত সময়ের কিছু পরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের হাতে দেওয়া হয় প্রথম টিকা। তারপরে একে একে নথিভুক্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের দেওয়া হয়েছে প্রতিষেধক। এ দিন প্রথমে টিকাকরণ কেন্দ্রে তেমন ভিড় না হলেও বেলা যত বেড়েছে, তমলুক-সহ পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার মোট ৯টি কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিয়েছেন তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা। আর এই স্বাস্থ্য জেলায় দিনের শেষে দেখা গিয়েছে, প্রথম দিনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।

তবে প্রথম দিনের এই কর্মসূচিতে কিছুটা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তিও দেখা গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, টিকা প্রাপকদের আগে থেকে তৈরি তালিকা ভারত সরকারের একটি পোর্টালের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত পোর্টাল ঠিক মত কাজ করেনি। ফলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পাঠানো তালিকা ধরেই প্রতিষেধক প্রাপকদের টিকার বিষয়ে জানিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার ভোরে পোর্টাল ঠিক হয়। তখন প্রতিষেধ প্রাপকদের যে তালিকা আসে, তাতে আগের তালিকার কয়েকজন প্রাপকদের নাম না থাকায় বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিছু নাম বাদ পড়ার ফলে কয়েকজনকে এ দিন শিবির থেকে ফিরে যেতে হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রতিষেধক নেওয়ার হার প্রত্যাশ্যাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বলে দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের। গড় ময়না গ্রামীণ হাসপাতালে এ দিন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক মাইতি প্রথম প্রতিষেধক নিয়েছেন। তমলুকে টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করে জেলাশাসক বিভু গোয়েল।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিতে প্রথম দিন ভাল সাড়া মিলেছে। এ দিন পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় ন’টি শিবিরে মোট ১০৩৭ জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। মোট ৯৯৫ জনকে দেওয়া গিয়েছে। পোর্টাল বিভ্রাটের জেরে যাঁদের এদিন টিকা দেওয়া যায়নি, তাঁরা পরেও টিকা নিতে পারবেন।’’

দিনের শুরুতে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলাতেও ছবিটা ছিল একই রকম। এই জেলার ছ’টি কেন্দ্রেও দিনের শুরুতে তেমন ভিড় ছিল না। বিকেল ৪টে পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ৩৮ জন, দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ৬৭ জন, নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ৪৩ জন, মাজনা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৬২ জন, মুগবেড়িয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৬০ জন এবং কামারদা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৬১ জন প্রতিষেধক নিয়েছেন।

কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে প্রথম টিকা নেন অনন্যা পাল নামে এক স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম বার প্রতিষেধক নিয়েছি। তবে এখনও মাস্ক, শারীরিক দূরত্ব, জীবাণুনাশক ব্যবহার করে যেতে হবে।’’ বিকেল পর্যন্ত তুলনামূলক ভাবে কম ব্যক্তি প্রতিষেধক নিতে আসা প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত কুমার রায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য যাঁদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের শুক্রবার থেকে মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হয়েছে। এর পরেও কতজন প্রতিষেধক নিলেন না, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্যভবনকে জানানো হবে। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ চূড়ান্ত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন