midnapore

সংস্কার হয়নি খাল, সঙ্কটে মাছ চাষিরা   

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ভাবে মাছের চাষকে ‘ময়না মডেল’ নামকরণ করে মৎস্য দফতর অন্যান্য জেলাতেও এই মডেলে মাছ চাষে উৎসাহ দিচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৬
Share:

বৃষ্টির দেখা নেই। পাঁশকুড়া গোটপোতায় শুকিয়ে গিয়েছে মেদিনীপুর ক্যানাল। নিজস্ব চিত্র

চাষের জমিকে জলাশয় হিসেবে ব্যবহার করে মাছ চাষের রেওয়াজ শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগেই। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় এভাবে মাছ চাষের শুরুর পরে গত কয়েক বছরে জেলার অন্যান্য ব্লকেও তা অনুসরণ করা হয়ে‌ছে। রুই, কাতলা, মৃগেল সহ বিভিন্ন মাছের চাষ হচ্ছে। ময়না ব্লকের অধিকাংশ এলাকাতেই এভাবে মাছের চাষ হচ্ছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ভাবে মাছের চাষকে ‘ময়না মডেল’ নামকরণ করে মৎস্য দফতর অন্যান্য জেলাতেও এই মডেলে মাছ চাষে উৎসাহ দিচ্ছে। কিন্তু এভাবে চাষের জমিকে মাছ চাষের জলাশয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিপুল পরিমাণ জল প্রয়োজন। যদিও ময়নায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়ায় মাটির নীচ থেকে জল তোলায় নিষেধ রয়েছে। ফলে এলাকায় মাছের ভেড়িতে জলের জোগান দিতে ভরসা কাঁসাই, কেলেঘাই, চণ্ডীয়া প্রভৃতি নদীর জল। কিন্তু ওই সব নদীর জল মাছের ভেড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভরসা যে সব বড় নিকাশি খাল সেগুলিরই বেশিরভাগই মজে গিয়ে বেহাল। এই অবস্থায় মাছ চাষের ভেড়িতে জলের জোগান নিয়ে সঙ্কটে মাছচাষিরা।

এর জেরে ময়না ব্লকের প্রায় ৪০০টি মাছের ভেড়ির মধ্যে ১০০টিরও বেশি ভেড়িতে জল না থাকায় চলতি বছরে মাছের চাষ শুরু করতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ চাষিদের। মাছ চাষিদের সংগঠন ময়না ফিশারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মদনমোহন মাইতি বলেন, ‘‘২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ময়না মডেল’-এ রাজ্যের সর্বত্র মাছ চাষের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। এরপর ময়না এলাকায় মাছ চাষের মতো অন্যান্য জেলাতেও মাছ চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। যদিও ময়না ব্লকের মাছচাষিরা এখন জলের সমস্যায় মাছ চাষ করতে খুবই সমস্যায় পড়েছেন।’’ মদনের অভিযোগ, ‘‘ময়না ব্লকে মাছ চাষের ভেড়িতে জলের জোগান দেওয়ার জন্য কাঁসাই ও কেলেঘাই নদীর সাথে যুক্ত বড় নিকাশিখালগুলি ভরসা। কিন্তু অধিকাংশ বড় খাল সংস্কারের অভাবে মজে বেহাল হয়ে যাওয়ায় ওই সব খাল দিয়ে নদীর জল আসছে না। ফলে জলের জোগান না থাকায় অনেক ভেড়ি শুকিয়ে গিয়েছে। এই সময় ভেড়িতে চারাপোনা ছাড়ার মরসুম হলেও অনেক ভেড়িতে জল না থাকায় চারা পোনা মাছ ছাড়তে পারছেন না চাষিরা। এভাবে ব্লকের প্রায় একশোরও বেশি ভেড়িতে মাছচাষ শুরু করতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে চাষিদের।’’

Advertisement

ময়নার গোজিনা পঞ্চায়েতের কলাগেছিয়া গ্রামের মাছচাষি অশ্বিনী বর্মন বলেন, ‘‘মাছের ভেড়ি শুকিয়ে গিয়েছে। গত তিন মাস ধরে জল নেই। আর ঢেউভাঙা থেকে যে খাল দিয়ে নদীর জোয়ারের জল আসত তাও আসছে না।ফলে জলের অভাবে ভেড়িতে মাছ চাষ শুরু করতে পারছি না।’’ ফিশারি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ময়না ব্লকে মাছের ভেড়িতে জলের জোগান দিতে এলাকার সমস্ত বড় নিকাশি খাল সংস্কার করতে হবে। কাঁসাই নদী থেকে লকগেটের মাধ্যমে ময়না এলাকায় জল ঢোকার ব্যবস্থা করতে শ্রীকন্ঠা কালভার্ট এলাকায় লকগেট নির্মাণ করতে হবে।

ময়নার বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ শেখ সাজাহান আলি বলেন, ‘‘ভেড়িতে জলের জোগান দেওয়ার জন্য কাঁসাই ও কেলেঘাই নদীর বিভিন্ন এলাকায় পাম্প বসিয়ে জল তোলা হচ্ছে। খাল মজে গিয়ে বেহাল এই অভিযোগ ঠিক নয়। তবে খালে কচুরিপানা ভরে যাওয়ায় স্বাভাবিক জলস্রোত নেই। মাছের ভেড়িগুলিতে জলের সমস্যা তেমন নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন