নির্দেশিকা বাতিলের দাবি

সঞ্চয় ও ত্রাণ প্রকল্পের সুবিধা চান মৎসজীবীরা

বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাড়া অন্য মত্‌স্যজীবীরা সঞ্চয় ও ত্রাণ প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না, কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশিকা বাতিল করার দাবি জানাল দক্ষিণবঙ্গ মত্‌স্যজীবী ফোরাম। ফোরামের সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল জানিয়েছেন, রাজ্যে মোট ১০ হাজার জন মত্‌স্যজীবী এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৭ হাজার ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৩ হাজার মত্‌স্যজীবী রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০১:১৯
Share:

বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাড়া অন্য মত্‌স্যজীবীরা সঞ্চয় ও ত্রাণ প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না, কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশিকা বাতিল করার দাবি জানাল দক্ষিণবঙ্গ মত্‌স্যজীবী ফোরাম। ফোরামের সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল জানিয়েছেন, রাজ্যে মোট ১০ হাজার জন মত্‌স্যজীবী এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৭ হাজার ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৩ হাজার মত্‌স্যজীবী রয়েছেন। এরমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মত্‌স্যজীবী বিপিএল তালিকা ভুক্ত নন। বিপিএল তালিকায় নাম না থাকার কারণে শুধু মাত্র পূব মেদিনীপুর জেলায় ৫ হাজারের বেশি মত্‌স্যজীবী ‘সঞ্চয় ও ত্রাণ’ প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

Advertisement

দেবাশিসবাবু জানান, বিপিএল তালিকাভুক্ত নয় এমন মত্‌স্যজীবীরাও যাতে ‘সঞ্চয় ও ত্রাণ’ প্রকল্পের সুযোগ পেতে পারেন, সে জন্য ‘ন্যাশনাল ফিশওয়ার্কাস ফোরাম’-এর যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানানো হয়েছে। গত ৩ মার্চ সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির কাছেও একটি দাবিপত্র পেশ করা হয়েছে। সারা দেশের ৯টি উপকূলবর্তী রাজ্য ও দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কয়েক লক্ষ মত্‌স্যজীবী সমুদ্র থেকে মাছ ধরে ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বছরে ন’মাস তাঁরা মাছ ধরা ও বিক্রির কাজ করেন। বছরের বাকি তিন মাস সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এইসব রোজগারহীন চিরাচরিত মত্‌স্যজীবীদের স্বার্থে ২০০০ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ‘সঞ্চয় ও ত্রাণ’ প্রকল্প শুরু করেন।

এই প্রকল্পের নিয়ম অনুসারে, মাছের মরসুমে মত্‌স্যজীবীরা প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে ন’মাসে জমা করে থাকেন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারও যৌথভাবে ৯০০ টাকা করে মোট ১ হাজার আটশো টাকা জমা রাখেন। বছরের যে তিন মাস সমুদ্রে মাছ ধারায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেই সময় মত্‌স্যজীবীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এককালীন ২ হাজার সাতশো টাকা করে জমা দেওয়া হয়। প্রথমে এই প্রকল্পে ১ হাজার আটশো টাকা দেওয়ার নিয়ম থাকলে ২০১২-১৩ সাল থেকে তা বাড়ানো হয়। তবে নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী বিপিএল তালিকা ভুক্ত নন, এমন মত্‌স্যজীবীরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। ফলে অনেক দরিদ্র মত্‌স্যজীবীও তালিকায় নাম না থাকার কারণে
অসুবিধায় পড়ছেন।

Advertisement

দক্ষিণবঙ্গ মত্‌স্যজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, চিরাচরিত মত্‌স্যজীবীদের প্রতিনিয়ত দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয়। এরা সকলেই মূলত দারিদ্র্যসীমার নিচেই বসবাস করেন। তাই সকল মত্‌স্যজীবীর যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পান, সে জন্য রাজ্যের মত্‌স্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে একাধিকবার স্মারকলিপি ও দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে বলে ফোরামের দাবি। মত্‌স্যজীবী ফোরামের দাবি, রাজ্যের মত্‌স্য দফতর উদ্যোগী হয়নি। কেরল সরকার তাদের রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা না মেনে রাজ্যের সব মত্‌স্যজীবীদের প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করেছে। দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ফোরাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন