দামালদের ইউ টার্নে টালমাটাল

কেউ বলছেন, হাতিদের টার্ন হার মানাবে মেসি, রোনাল্ডোদের। কেউ বলছেন, নির্ঘাত গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। না হলে এমন চরকি পাক খাওয়াতে পারে!

Advertisement

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২২
Share:

দল বেঁধে জঙ্গলরাস্তায়। গোয়ালতোড়ে। নিজস্ব চিত্র

কেউ বলছেন, হাতিদের টার্ন হার মানাবে মেসি, রোনাল্ডোদের। কেউ বলছেন, নির্ঘাত গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। না হলে এমন চরকি পাক খাওয়াতে পারে!

Advertisement

হাতির পালের গতিবিধির উপর নজরদারি রাখতে গিয়ে নাজেহাল বনকর্মীদের ঘরোয়া আলোচনায় এখন শোনা যাচ্ছে এমনই সব মন্তব্য।

মন্তব্য মজার ছলে করা হলেও বনকর্মীদের একাংশ মানছেন, এ বার যে ভাবে হাতির পাল ঘন ঘন ডেরা বদলাচ্ছে তাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগাড়। এমনকী, ধন্দে ফেলেছে হাতির পালের গতিও। কখনও দ্রুত আবার কখনও ধীর গতিতে ডেরা বদলে বনকর্মীদের বিপদে ফেলছে হাতির পাল। বন দফতর সূত্রে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, শনিবার রাতে হাতির পালটি গোয়ালতোড়ের টাঙাশোল-পাথরমারির জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। দশ দিনের মধ্যে হাতির পালের লালগড় থেকে গোয়ালতোড় ছুঁয়ে গড়বেতা হয়ে ফের গোয়ালতোড়ের জঙ্গলে উল্টোদিকে যাত্রায় ঘুম ছুটেছে বনকর্তাদের। অনেকে তাই এই পিছু হটাকে তুলনা করছেন ফুটবলে মেসি, রোনাল্ডোর স্কিলের সঙ্গে।

Advertisement

গত সপ্তাহে লালগড় থেকে গোয়ালতোড় জঙ্গলে ঢোকার পর হঠাৎ গতি বাড়িয়ে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উজিয়ে গড়বেতার আমলাগোড়া, মাগুরাশোল জঙ্গলে ঘাটি গেড়েছিল হাতির পাল। কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন বনকর্তারা। ভেবেছিলেন, এ বার বোধহয় কম সময়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলে পৌঁছে যাবে হাতিরা। কিন্তু তাঁদের ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে ফের পিছু হটতে

শুরু করেছে তারা। অনেকটা যেন গেরিলা যুদ্ধের কায়দায় দু’পা এগিয়ে এক পা পিছু হটা।

৫০-৫৫ টি হাতির এই পালে ৭-৮ টি শাবক রয়েছে। এই শাবকদের নিয়েই পূর্ণবয়স্ক হাতিগুলি ডেরা বদলাচ্ছে। কিন্তু নির্দিষ্ট গন্তব্যে না গিয়ে হাতিরা এ রকম পিছু হটছে? বন দফতরের এক রেঞ্জার বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে হদহদির জঙ্গলে একটি হাতির বাচ্চা হয়েছে। তাকে ঘিরে রেখেছে আরও কয়েকটি হাতি। তাই তারা আমলাগোড়ার মাগুরাশোল জঙ্গলে গিয়েই ফিরে এসেছে হদহদিতে। সেই বাচ্চাটিকে নিয়েই হাতির পালটি হদহদির জঙ্গল ছেড়ে টাঙাশোল-পাথরমারির জঙ্গলে চলে গিয়েছে।’’ এক বনকর্তা বলেন, ‘‘এ বার ওদের মতিগতি বুঝতে পারছি না।’’

হাতিদের ডেরা বদলের সঙ্গে সঙ্গে বন দফতরের কর্মীরাও রাত জেগে তাদের উপর নজরদারি চালাচ্ছেন। রাতেই সতর্ক করে দিচ্ছেন জঙ্গল সংলগ্ন জনপদের বাসিন্দাদের। বনদফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘জঙ্গলে হাতি থাকলে আমাদের সর্বদা নজরদারি থাকে। ওদের গতিবিধি দেখে আমাদের মুভ করতে হয়, আমরা দেখি দুর্ঘটনা এড়িয়ে যতটা সম্ভব কম ক্ষয়ক্ষতি হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন