প্রাক্তন মাওবাদীদের অনুষ্ঠান হবেই: মন্ত্রী

শিলদায় রাজ্যস্তরের হুল দিবসের অনুষ্ঠানে পুনর্বাসন পাওয়া প্রাক্তন মাওবাদীরা অনুষ্ঠান করবেন বলে স্থির হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী এই উৎসবের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আজ, শনিবার প্রাক্তন মাওবাদীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

শিলদা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:২১
Share:

সাঁওতালিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর বয়কটের হুঁশিয়ারির মধ্যেই হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠান হল ঝাড়গ্রামের শিলদায়। সেখানে এসে রাজ্যের আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জেমস কুজুর আরও জানালেন, হুল দিবস উদ্‌যাপনের মঞ্চে কোনওভাবেই প্রাক্তন মাওবাদীদের অনুষ্ঠান বাতিল করা হবে না। শুক্রবার আনন্দবাজারের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রাক্তন মাওবাদীরা অনুষ্ঠান কেন করবে না? এই মঞ্চ তো সকলের জন্য। ওঁরাও ভাল হতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁদের ভাল মানুষ হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন।’’

Advertisement

শিলদায় রাজ্যস্তরের হুল দিবসের অনুষ্ঠানে পুনর্বাসন পাওয়া প্রাক্তন মাওবাদীরা অনুষ্ঠান করবেন বলে স্থির হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী এই উৎসবের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আজ, শনিবার প্রাক্তন মাওবাদীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। পবিত্র হুল দিবসের অনুষ্ঠানে এক সময় খুন-সন্ত্রাস করা প্রাক্তন মাওবাদীরা অনুষ্ঠান করলে তীব্র বিরোধিতা করা হবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল সাঁওতালদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। হুল দিবসের অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়ে জঙ্গলমহল জুড়ে পোস্টারও সাঁটিয়েছে তারা।

শুক্রবার ওই আদিবাসী সংগঠনের রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধের জেরে জঙ্গলমহলের জনজীবন বিপর্যস্তও হয়। এই অবস্থায় শিলদায় হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানস্থলে ছিল থিকথিকে পুলিশ। নিরাপত্তায় ছিলেন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এবং পাঁচজন ডিএসপির তত্বাবধানে কয়েকশো পুলিশকর্মী। তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বেশ কিছু লোক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এই শিলদা আগে ভয়ঙ্কর জায়গা ছিল। এখন এখানে মানুষ শান্তিতে আছেন।’’

Advertisement

এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, ঝাড়গ্রাম জেলা সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা, ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুন, পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তা, বিধায়ক দুলাল মুর্মু প্রমুখ। মন্ত্রী চূড়ামণিবাবু বলেন, ‘‘এই জেলা শান্তিতে আছে, শান্তিতে থাকবে। গুজবে কেউ কান দেবে না।’’

আদিবাসী সংগঠনের হুমকিতে অনেকে শিলদার অনুষ্ঠানে আসেননি বলে মন্ত্রীকে জানানো হলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা হুমকি দিচ্ছে, তাঁদের কোনও অস্তিত্ব নেই। সাঁওতাল সংগঠনটির আন্দোলনের বিষয় আলাদা।’’ যদিও ওই সংগঠনের মুখপাত্র রবিন টুডু বলেন, ‘‘মাওবাদীদের হাতে জঙ্গলমহলে ১২৭ জন আদিবাসী খুন হয়েছেন। মন্ত্রীর বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।’’ তাঁদের আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন