Swastha Sathi Card

Swasthya Sathi: পরিবার ১১ লক্ষ, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড বিলি ১৪ লক্ষ

সংখ্যার হিসাবে পূর্ব মেদিনীপুরে ১২০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। বিষয়টি জানার পর বিস্মিত জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২২ ০৭:৪৫
Share:

ফাইল চিত্র।

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি নার্সিংহোম এবং বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে জেলার মোট পরিবারের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক আবেদনকারীর কাছে পৌঁছে গেল কার্ড। সংখ্যার হিসাবে পূর্ব মেদিনীপুরে ১২০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। বিষয়টি জানার পর বিস্মিত জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। অবিলম্বে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বিনা খরচে রাজ্যবাসীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চালু হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য রাজ্যব্যাপী কয়েক দফায় চলেছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। নিয়ম অনুসারে, একটি পরিবারের একটিই কার্ড নথিভুক্ত হয়। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরে দেখা গিয়েছে, জেলায় মোট পরিবারের তুলনায় স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড প্রাপকের সংখ্যা বেশি। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় ১০ থেকে ১১ লক্ষ পরিবারের বসবাস। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব বলছে, নন্দীগ্রাম এবং পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা মিলিয়ে ১৪ লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বিলি হয়েছে। এর পরেও ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে ওই প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, তাঁদের পরিবারের কারও নামেই এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই।

প্রশাসন সূত্রের খবর, একই পরিবারে একাধিক সদস্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন। নির্দেশিকা অনুসারে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করেন, এমন ব্যক্তি ওই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন না। ওই নিয়ম ভেঙেও অনেকে কার্ড পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানির পর ওই সমস্ত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। বহু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাতিলও করে দেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

জেলার স্বাস্থ্য দফতরের (স্বাস্থ্য সাথী কার্ড) দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তরুণ কুমার কানঠাল বলেন, ‘‘জেলায় পরিবারের তুলনায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কার্ড বেশি বিলি হয়েছে। ১১৬ শতাংশ মানুষের হাতে এই প্রকল্পের কার্ড রয়েছে। যা হওয়া উচিত নয়।’’ সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, একই পরিবারের তিন থেকে চারজন সদস্য রয়েছেন, যাঁরা প্রত্যেকেই পৃথকভাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছেন। এরকম লোকেদের খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মর্মে জেলার ২৫ ব্লক এবং পাঁচটি পুরসভা এলাকায় খোঁজখবর শুরু হয়েছে। জেলার বিডিওদের এর তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই কেউ কেউ পরিবারের অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সরাসরি পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে ফেরত দিচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘ব্লক প্রশাসন এবং পুরসভার তরফের অতিরিক্ত কার্ড হাতে রয়েছে এমন লোকেদের সন্ধান জানার পর নির্দিষ্ট ওই পরিবারের নামে একটি মাত্র ইউআরএন কোড চালু রাখা হচ্ছে। বাকিগুলি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।’’

জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘পরিবার পিছু যাতে একটি কার্ড যাতে তার জন্য সরকারি নির্দেশ মেনে আমরা অতিরিক্ত কার্ড খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’’

কী ভাবে এই অনিয়ম হল, স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। তবে কি দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে কোনও ভাবেই প্রশাসনিক নজরদারি মানা হয় না! এ ব্যাপারে বিজেপির কাঁথির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘প্রশাসন গোড়া থেকেই সঠিকভাবে প্রকল্প রূপায়ণের চেষ্টা করলে সরকারি কোষাগার থেকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হত না। আসলে পুরো প্রকল্পটি লোক দেখানো।’’ যদিও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধে যাতে আমজনতা না পান, সে জন্য বিজেপি নেতৃত্ব ষড়যন্ত্র করেছে। তাঁদের দলের সমর্থিত পরিবারের একাধিক লোকের নামে কার্ডের আবেদন করিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন