বালাজি রূপ থেকে রথ, ভিড় টানছে থিম

কোথাও বালাজির আদল, আবার কোথাও ৬১ ফুটের বিশালকার মূর্তি। শুধু মণ্ডপে নয়, গণেশ মূর্তিতেও থিমের ছোঁয়া। সোমবার গণেশ চতুর্থীতে গণপতি বন্দনায় মেতে উঠল মিশ্র ভাষাভাষীর শহর খড়্গপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৭
Share:

বহু রূপেণ... বালাজির আদলে সিদ্ধিদাতা খড়্গপুরের মথুরাকাটির ধোবিঘাটের এক মণ্ডপে।

কোথাও বালাজির আদল, আবার কোথাও ৬১ ফুটের বিশালকার মূর্তি। শুধু মণ্ডপে নয়, গণেশ মূর্তিতেও থিমের ছোঁয়া। সোমবার গণেশ চতুর্থীতে গণপতি বন্দনায় মেতে উঠল মিশ্র ভাষাভাষীর শহর খড়্গপুর।

Advertisement

খরিদার কুমোরপাড়ার ‘জেনারেশন এক্স’ ক্লাবের পুজো এ বার ২১ বছরে পড়ল। পাঁচ বছর আগেই থিমের ময়দানে পা রেখেছে এই ক্লাব। অন্যদের টেক্কা দিতে এ বার তাদের অস্ত্র বালাজির আদলে ১০ ফুট উচ্চতার গণেশ মূর্তি। মহারাষ্ট্রীয় রীতিতে হয়েছে পুজো। মণ্ডপ অবশ্য ছিমছাম। ক্লাবের সভাপতি প্রদীপ কুমার বলেন, “আমরা দেবতার নানা রূপের পুজো করি। সেই কারণেই গণেশ মূর্তিতে বালাজির রূপ ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি।’’

খরিদার গুরুদ্বার রোডে গণেশের রথে চড়া।

Advertisement

নিউ সেটলমেন্টের ‘বালা সেবা সঙ্ঘ’-এর ৬১ ফুটের সিদ্ধিদাতা দেখতে ভিড় জমেছে সোমবার সকাল থেকেই। এ বার এই পুজোর বাজেট ১৫ লক্ষ টাকা। মূর্তির সামনেই রাখা ছিল ৬১ কিলোগ্রামের সুবিশাল লাড্ডু। প্রসাদী এই লাড্ডু দর্শনার্থীদের দেখার জন্য মণ্ডপেই রাখা ছিল। পরে এই লাড্ডুটি নিলাম করা হবে বলে উদ্যোক্তাদের সূত্রে জানা গিয়েছে। দক্ষিণী আচার মেনে হয়েছে পুজো। মণ্ডপের পাশে বসেছে মেলা। এ দিন বিকেলে পুজোর উদ্বোধন করেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার।

শুধু মূর্তির আদলে নয়, মূর্তি তৈরির উপকরণেও অভিনবত্বের ছোঁয়া। পায়ের তোড়া, কানের দুল, গলার হার-সহ নানা অলঙ্কার দিয়ে নিউ সেটেলমেন্টের ‘বোব্বিলি বয়েজ ক্লাব’-এর ১১ ফুটের গণেশ মূর্তি তৈরি হয়েছে। কমিটির কর্মকর্তা কিরণ কুমার বলেন, “আমরা চার জন সদস্য নিজেদের উদ্যোগেই এই পুজো করি। বছর কয়েক হল থিমের মূর্তি তৈরি হচ্ছে।’’

৬১ ফুট উঁচু মূর্তি নিউ সেটলমেন্ট এলাকায়।

দেশলাই কাঠি দিয়ে গণেশ মূর্তি তৈরি করে তাক লাগিয়েছে ছত্তীসপাড়ার ‘বেঙ্গল বয়েজ ক্লাব’ও। আট ফুটের মূর্তি তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৬২ হাজার দেশলাই কাঠি। পুজো কমিটির সম্পাদক শ্রীনিবাস রাও বলেন, “থিম ছাড়া এখন দর্শক টানা যায় না। যতটা কম খরচে সম্ভব পুজো করে বাকি টাকা সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে ব্যয় করি।” দর্শক টানতে পিছিয়ে নেই গোলবাজারের ‘গোল্ডেন ক্লাব’, নিমপুরা গোল্ডেনচক, মথুরাকাটির পুজোগুলিও।

থিমের মাঝে পুজোর সাবেকিয়ানা অটুট রাখার উপরও জোর দিয়েছেন অনেক পুজো উদ্যোক্তাই। খরিদার মিলন মন্দির সংলগ্ন পুজোর গণেশ মূর্তি সাবেক ধাঁচের। কমিটির কর্মকর্তা ইন্দ্রনীল ঘোষ বলেন, “সকলে থিমের দিকে ঝুঁকেছে। পুজোর সাবেকিয়ানাই আমাদের মূল মন্ত্র।”

সাবেকিয়ানা না থিম- চিরকালীন এই বিতর্ক উড়িয়ে রেলশহর অবশ্য মজে সিদ্ধিদাতার আরাধনায়।

স্ট্র দিয়ে তৈরি গণেশ নিউ সেটলমেন্টের একটি মণ্ডপে।

সোমবার ছবিগুলি তুলেছেন কিংশুক আইচ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন