আবর্জনায় ছেয়েছে রাস্তা। খড়্গপুরের ফকির মহল্লা এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই, মাথায় হাত খড়্গপুর পুরসভার। জঞ্জাল ফেলার জমি চেয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সাথে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছে পুরসভা। এ বার রেলের কাছে এ বিষয়ে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
৩৫টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট খড়্গপুর পুরসভা এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ৭০ মেট্রিক টন আবর্জনা তৈরি হয়। আগে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে চৌরঙ্গীর কাছে আবর্জনা ফেলা হত। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারি করায় জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে শহরে পুরীগেট সংলগ্ন রেলের জমিতে বর্জ্য ফেলা হত। স্থানীয় বাসিন্দারা আপত্তি করায় সেখানেও নোংরা ফেলা বন্ধ হয়।
মাস কয়েক আগে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য খড়্গপুরের গোপালীতে রাজ্য সরকারের থেকে একটি জমি পায় পুরসভা। সেখানেও স্থানীয়দের বাধার মুখে পিছু হটতে হয়েছে পুরসভাকে। এ বার পরিস্থিতি সামলাতে রেলের দ্বারস্থ হয়েছে পুরসভা। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “গোপালীর ছোট জমিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপন পদ্ধতি গড়ে তোলা সম্ভব নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আগেই আবর্জনা ফেলার জমি চেয়ে রেলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। এডিআরএম-এর সঙ্গে আলোচনা করে আবার আবর্জনার জন্য জমি চেয়ে আবেদন করেছি। প্রয়োজনে রেলের কাছে লিখিত আবেদন জানাব।”
পুরসভার দু’টি কম্প্যাক্টর থাকলেও তা দিয়ে শহরের বিপুল আবর্জনা সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে শহরের বিভিন্ন ভ্যাটে দীর্ঘদিন আবর্জনা জমে থাকছে। সাফাই না হওয়ায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ঝর্না মাইতি, রাধা দাসেরা বলেন, “বিভিন্ন এলাকা থেকে আবর্জনা তুলে ছোট ভ্যাটে ফেলা হয়। সেখান থেকে আবর্জনা তুলে বড় ভ্যাটে ফেলা হয়। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় বাড়ির সামনে জঞ্জাল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কাকে কী বলব!”
পুরপ্রধান প্রদীপবাবুর বক্তব্য, “যেখানেই আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সেখানেই বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বড় জমির অভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপন পদ্ধতি গড়ে তোলা যাচ্ছে না। রেলের কাছে জমি চেয়ে আবেদন জানিয়েছি। আশা করছি, সমস্যার সমাধান করা যাবে।” রেলের খড়্গপুরের এডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান বলেন, “প্রাথমিকভাবে পুরপ্রধানের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা বছর খানেক আগে জমি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন বলে শুনেছি। কিন্তু আমরা সেই চিঠি পাইনি। পুরসভাকে এ বিষয়ে নতুন করে লিখিত আবেদন জানাতে বলেছি। তারপর ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে জমি দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।”