অবস্থান: রাজনৈতিক ছাত্র সংসদের দাবিতে ঘেরাও পড়ুয়াদের। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল নয়। রাজনৈতিক ছাত্র সংসদের দাবিতে সরব হলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। সোমবার একদল পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর দফতরের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থান করে। বেলা ১১টা থেকে রাত পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ-অবস্থান চলে।
বিক্ষোভে কোনও রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের পতাকা দেখা যায়নি। তবে যে সব পড়ুয়া ওই কর্মসূচিতে ছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জনবাবু বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেছেন।” তাঁর কথায়, “ছাত্র সংসদের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। তাই অ্যাডহক ছাত্র কাউন্সিল তৈরি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।” উপাচার্যের আশ্বাস, “ছাত্রছাত্রীরা কোনও দাবি জানালে নিশ্চিত ভাবে তা খতিয়ে দেখা হবে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, দিনকয়েক আগে ছাত্র সংসদের মেয়াদ ফুরিয়েছে। এরপরই অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বৈঠক ঠিক হয়, কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর নাম চাওয়া হবে। সেই মতো বিভাগীয় প্রধানদের লিখিত ভাবেই বিষয়টি জানানো হয়। এই পদক্ষেপের কথা জানতে পেরেই পড়ুয়াদের একাংশ বিক্ষোভ- অবস্থানের ডাক দেন।
বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জনবাবুর দফতরের সামনে ওই কর্মসূচি শুরু হয়। রাত পর্যন্ত নিজের দফতরে আটকে থাকতে হয় উপাচার্যকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, “ছাত্র সংসদের মেয়াদ ফুরনোর পরে একটা পদক্ষেপ করতেই হতো। এখন তো নির্বাচন হবে না। তাই অ্যাডহক ছাত্র কাউন্সিল গঠনই সবচেয়ে ভাল পদক্ষেপ হতো। সব দিক খতিয়ে দেখে সেই পদক্ষেপের দিকেই এগোনো শুরু হয়।” তাঁর কথায়, “আগের ছাত্র সংসদের মেয়াদ ফুরিয়েছে। তবে নতুন ছাত্র সংসদ গঠন না-হওয়া পর্যন্ত আগের সংসদই ছাত্র সংসদের কাজকর্ম দেখভাল করবে। এটাই রীতি।”
অবস্থান-বিক্ষোভে অন্যদের সঙ্গে ছিলেন আকাশপ্রদীপ ভৌমিক, প্রসেনজিৎ বেরার মতো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারাও। প্রসেনজিতের কথায়, “শুধু ছাত্র সংসদ নির্বাচন নয়, আরও কয়েকটি দাবিতে এই কর্মসূচি।” বিক্ষোভে সামিল পড়ুয়াদের দাবি, অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের পক্ষে কারও মত নেই। অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সিদ্ধান্ত ‘অগণতান্ত্রিক’। এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে আঘাতের সামিল। ‘অগণতান্ত্রিক’ ওই সিদ্ধান্ত পড়ুয়াদের স্বার্থের পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, “কারও গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে চাই না। আইনের মধ্যে থেকে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং মতামত দেবেন।”