বাড়ানো হল প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পোশাকের বরাদ্দ। লোকসভা ভোটের মুখে এক ধাক্কায় পড়ুয়া পিছু পোশাকের অর্থ বাড়ানো হয়েছে ২০০ টাকা। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
এত দিন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বছর এক জোড়া পোশাকের সরকারি বরাদ্দ ছিল ৪০০ টাকা। ওই টাকায় পড়ুয়াদের দু’সেট পোশাক কিনে দেওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সম্প্রতি পোশাক কেনার জন্য এক ধাক্কায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৬০০ টাকায়। বুধবার সর্বশিক্ষা মিশনের রাজ্য প্রকল্প অধিকর্তা একটি নির্দেশকা দিয়ে ওই খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছেন।
এছাড়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি ছিল, পোশাক সরবরাহের জন্য স্বসহায়ক গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ে গঠিত সঙ্ঘগুলিকে দ্বায়িত্ব দেওয়ার বাধ্যতামূলক নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে। সর্বশিক্ষা মিশনের নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সঙ্ঘর বদলে এবার স্বসহায়ক গোষ্ঠীর মাধ্যমেই পোশাক কেনা যাবে। এর ফলে পোশাক কেনার কাজ আগের চেয়ে সহজ হবে বলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মত।
তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে পড়ুয়াদের পোশাক কেনায় একলপ্তে অর্থ বৃদ্ধি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক সুবিধালাভের উদ্দেশ্যই বলে বিরোধী দল ও শিক্ষক সংগঠনগুলির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, ‘‘পোশাক কেনার জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছিল, তা যথেষ্ট নয় বলে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। হঠাৎ লোকসভা ভোটের মুখে ওই খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে তাঁদের ক্ষোভ প্রশমন করার চেষ্টার পাশাপাশি অভিভাবকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।’’
শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে অর্থ বৃদ্ধি করা হয়নি। লোকসভা ভোটের মুখে কেন বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হল! রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই এটা করা হয়েছে বলে আমাদের অনুমান।’’
অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েস্টবেঙ্গল তৃণমূল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের জেলা সভাপতি নীলকান্ত অধিকারী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের পোশাক খাতে অর্থ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা ছিল বলেই, তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে শিক্ষক-অভিভাবকদের প্রভাবিত করার কোনও উদ্দেশ্য নেই। নিছক রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্য অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’