নাতনিকে পিষে মারার কথা কবুল ঠাকুরদার

পুলিশ সূত্রে খবর, নাতনি যে তার পায়ে পিষে গিয়েছিল, তা কবুল করেছে দীপক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অবশ্য তার দাবি, নাতনির গায়ে পা লেগে গিয়েছিল। কিন্তু পায়ে পিষে যাওয়ায় নাতনি যে মারা গিয়েছে, তা সে বুঝতে পারেনি!

Advertisement

মেদিনীপুর

নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১১
Share:

গ্রেফতারের পরে দীপক বেহেরা। নিজস্ব চিত্র।

দেড় মাসের নাতনিকে পা দিয়ে পিষে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে সে। অথচ সেই ঠাকুরদা, ধৃত দীপক বেহেরা বেশ নির্লিপ্ত। কোনও অনুশোচনা নেই তার, যা দেখে অবাক তদন্তকারীরাও। এক তদন্তকারী মানছেন, ‘‘ধৃতকে নির্লিপ্ত দেখে অবাকই হচ্ছি। অনেক ক্ষেত্রে ঘটনা ঘটানোর সময়ে অভিযুক্ত বুঝতে পারে না যে সে কী করছে। তবে পরে অনুশোচনা হয়। এ ক্ষেত্রে ধৃতের কোনও অনুশোচনাই নেই।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, নাতনি যে তার পায়ে পিষে গিয়েছিল, তা কবুল করেছে দীপক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অবশ্য তার দাবি, নাতনির গায়ে পা লেগে গিয়েছিল। কিন্তু পায়ে পিষে যাওয়ায় নাতনি যে মারা গিয়েছে, তা সে বুঝতে পারেনি! পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘তদন্ত সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ শনিবার ধৃত দীপককে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতের তিন দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব বলেন, ‘‘ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তাই পুলিশ হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়।’’

মেদিনীপুর শহরের নিমতলাচকের বেহেরাপাড়ায় ঘটনা ঘটেছিল গত বুধবার রাতে। মাস দেড়েকের কন্যাসন্তানকে পাশে নিয়ে মেঝেতে মাদুর পেতে ঘুমোচ্ছিলেন বিনোদ ও সোমা। অভিযোগ, রাতে ঘরে ঢোকে শিশুটির ঠাকুরদা দীপক। বৃহস্পতিবার সকালে বাবা-মা দেখেন, সাড়া দিচ্ছে না সন্তান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, অনেক আগেই ওই শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে। এরপর মেদিনীপুর শহরের পালবাড়িতে কাঁসাই নদীর একপাশে দেহ পুঁতে ফেলা হয় মাটিতে। কিন্তু পরে মৃত শিশুর দিদা সন্ধ্যা বাগ অভিযোগ করেন, পা দিয়ে পিষে খুন করা হয়েছে তাঁর নাতনিকে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার শিশুকন্যার ঠাকুরদা দীপককে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি থেকে তুলে শিশুকন্যার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশেরও অনুমান, শ্বাসরোধ হয়েই শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে। দেহ দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, দেড় মাসের মেয়েটির পেট ও বুকের মাঝামাঝি অংশ পা দিয়ে পিষে দেওয়া হয়েছে। চোখেও না কি পায়ের দাগ দেখা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই সব পরিষ্কার হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন