সঙ্কটে শহর: ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া

মশক ধ্বংসে ঠুঁটো পুরসভা

গত বছরই মেদিনীপুরে চোখ রাঙিয়েছিল ডেঙ্গি। শহরের বেশ কিছু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। ম্যালেরিয়ার প্রকোপও ছিল।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৩০
Share:

গত বছরই মেদিনীপুরে চোখ রাঙিয়েছিল ডেঙ্গি। শহরের বেশ কিছু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। ম্যালেরিয়ার প্রকোপও ছিল।

Advertisement

শহরবাসীর অভিযোগ ছিল, এত অসুস্থতা সত্ত্বেও মশার জন্ম প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা নেয়নি পুরসভা। সেই সুযোগেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়তে শুরু করে।

বছর ঘুরেছে। আবার মশাবাহিত রোগের মরসুম আসতে চলেছে। তবে বাসিন্দারা বলছেন কর্তৃপক্ষের এ বারও তেমন হেলদোল নেই!

Advertisement

শহরের নিকাশি নর্দমাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার হচ্ছে না। নিয়মিত সাফাই হচ্ছে না ভ্যাটগুলোও। শহরের সব ওয়ার্ডে মশা মারার তেলও স্প্রে করা হচ্ছে না। ফলে, এ বারও শহরে ডেঙ্গি- ম্যালেরিয়ার চোখ রাঙানি থেকেই যাবে, আশঙ্কা শহরবাসীর।

পুরসভা অবশ্য দাবি করেছে, গতবারের মতো পরিস্থিতি এ বার হবে না। আগে থেকেই পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। মেদিনীপুরের উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের কথায়, “মশার জন্ম প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। সব ওয়ার্ডেই মশা-নাশক রাসায়নিক স্প্রে করার কাজ চলছে। এক-একটি এলাকায় এক- একদিন রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে।”

যদিও পুরসভারই এক সূত্রে খবর, পর্যাপ্ত রাসায়নিক নেই। ফলে, সব দিন সব ওয়ার্ডে মশা-নাশক এই রাসায়নিক স্প্রেও করা যাচ্ছে না। উপপুরপ্রধান অবশ্য বলেন, “রাসায়নিকের কোনও সমস্যা নেই। প্রয়োজনে আরও রাসায়নিক আনা হবে।”

জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান মানছেন, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচির ওপর জোর দিতেই হবে। মানুষ সচেতন না হলে এই রোগ প্রতিরোধ করা অসম্ভব। তাঁর কথায়, “এ ক্ষেত্রে কী কী উপসর্গ দেখা দিতে পারে, কী ভাবে রোগ ছড়িয়ে পড়ে, সাবধানতার জন্য কী কী করা প্রয়োজন, আমরাও তা মানুষকে জানানোর চেষ্টা করছি। মেদিনীপুরেও সচেতনতামূলক কর্মসূচি হবে।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। শহরে ২৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। জনসংখ্যা প্রায় দু’লক্ষ। জমা জলই মশাবাহিত রোগের অন্যতম কারণ। গতবার জমা জলের ব্যাপারে তেমন পদক্ষেপ করেনি পুরসভা। তার ফল ভুগতে হয়েছে। এ বারও ছবিটা এক। শহরের এ দিকে সে দিকের নর্দমাগুলোয় জল জমে থাকতে। নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না।

শহরবাসীর বক্তব্য, এ বারও মশার উপদ্রব বাড়বে। নোংরা-আবর্জনা বৃষ্টির জলে ধুয়ে নর্দমায় নামবে। সেখানে আরও জল জমবে। শহরে নেই কোনও পতঙ্গবিদও। পশ্চিম মেদিনীপুরে পতঙ্গবাহিত রোগের বিষয়টি দেখভাল করেন উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান।

মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথবাবুর অবশ্য দাবি, “ইতিমধ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনও ভাবে কোথাও যাতে জল বেশিক্ষণ জমে না থাকে এবং জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে সেই বিষয়ে ওয়ার্ডগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মশা তাড়ানোর জন্য ধোঁয়া ছড়ানোর কাজ চলছে। মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, মশার জন্ম প্রতিরোধ করা গেলেই ওই সব রোগের প্রকোপ কমবে। ফলে, সকলকে সচেতন হতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন