ভেঙে পড়েছে পাখির খাঁচা। নিজস্ব চিত্র
বিশ্ব পরিবেশ দিবসে হতশ্রী হয়ে পড়ে রয়েছে হলদিয়া বন্দরের পরিবেশ পার্ক। কর্তৃপক্ষের হেলদোল তো নেইই। বরং তাঁরা জোরের সঙ্গে জানাচ্ছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ওই পার্ক।
হলদিয়া বন্দরের অফিসারস্ ক্লাবের পাশে কয়েক একর জায়গার ওপর বছর দশেক আগে এই পার্কটি তৈরি হয়েছিল। হলদি নদীর তীরে জঙ্গলে ঘেরা মনোরম পরিবেশে ওই পার্কে এক সময় ছিল নানা রকমের পাখি, রঙিন মাছ, তিনটি পুকুর ভর্তি নানা জাতে পদ্ম, দেশি-বিদেশি ফুলের গাছ। শিশুদের জন্য ছিল দোলনা, বয়স্কদের বসার জায়গা। বিকেল হলেই গমগম করত পরিবেশ পার্ক। এখন সবই অতীত।
গত কয়েক বছর ধরেই আর খোলা হচ্ছিল না পার্কটি। অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণও করতেন না কর্তৃপক্ষ। পুকুরগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাখির খাঁচায় মরচে পড়েছে, ভেঙে গিয়েছে শিশু বিনোদনের দোলনাগুলিও। স্থানীয়দের অভিযোগ, গাছগাছালি চুরিও হয়ে গিয়েছে রাতের অন্ধকারে। এক সময় নিরাপত্তা রক্ষীরা দেখাশোনা করতেন পার্কটি। তাঁদেরও আর দেখা মেলে না এখন। তাই সন্ধে নামলেই গুটিগুটি পায়ে পার্কে ঢোকে কেউ বা কারা। চলে নানা রকমের অসামাজিক কাজকর্ম। যেখানে সেখানে পড়ে থাকে মদের বোতল। সাপ আর শেয়ালের ভয়ে দিনের বেলাতেও ঢোকা যায় না ওই পার্কে।
হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) অমল দত্ত অবশ্য বলেন বাইরে থেকে মানুষ আসতেন বলেই তাঁরা পার্ক বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বন্দর আবাসনের বাইরে থেকেও অনেক মানুষ আসতেন। তাতে আবাসিকদের নিরাপত্তা নষ্ট হচ্ছিল। তাই পার্কটি বন্ধ করা হয়েছে।’’
তবে এতে ক্ষুন্ন স্থানীয় বাসিন্দারা। হলদিয়ার কল্লোলের বাসিন্দা নমিতা দাস বলেন, ‘‘পরিবেশ পার্ক তো একটা শিক্ষামূলক জায়গা। এ ভাবে পার্ক বন্ধ করা ঠিক হয়নি।’’ স্থানীয়রা অনেকেই বলছেন, এ ভাবে পার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা দুঃখিত। অত গাছ নষ্ট হয়ে গেল, এটা পরিবেশের পক্ষেও ক্ষতিকর।
তবে বন্দর প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পরিবেশ বাঁচাতে বন্দরের মধ্যে অনেক গাছ লাগানো হয়েছে। তা ছাড়া শহরের একাধিক পার্কও কর্তৃপক্ষ নতুন করে সাজিয়েছেন। তাই ওই পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবার নেই।