বদলি চেয়ে আবেদন নিগৃহীত চিকিৎসকের

চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুতে কর্তব্যরত চিকিৎসককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন পাঁচ জন। হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়াতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছেন সিএমওএইচ। সুপার বৈঠক করেছেন নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:১৫
Share:

চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুতে কর্তব্যরত চিকিৎসককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন পাঁচ জন। হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়াতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছেন সিএমওএইচ। সুপার বৈঠক করেছেন নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে। কিন্তু তাতে যে আশঙ্কা কমেনি চিকিৎসকমহলে তা প্রমাণ করে দিলেন সে দিনের নিগৃহীত চিকিৎসক সূর্যশেখর দাস। সোমবারই বদলি চেয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবার হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সেই আবেদনপত্র জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে সূর্যশেখর দাস ডেবরা অথবা শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এর পিছনে একমাত্র কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন, মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তার অভাব। সূর্যবাবুর কথায়, “এখনও আতঙ্কে আছি। এই হাসপাতালে আর কাজ করতে পারব না। যে কোনও সময় হামলা হতে পারে। তাই বদলির আবেদন করেছি।”

১ ফেব্রুয়ারি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কানাইয়া শাহ (৬২) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। সূর্যশেখরবাবু ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দিতেই উত্তেজনা ছড়ায়। জরুরি বিভাগের সামনেই মারধর করা হয় ওই চিকিৎসককে। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ২৬ জানুয়ারি শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে অন্য চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন ওই রোগী। সূর্যবাবু শুধুমাত্র মৃত্যুর শংসাপত্র দিয়েছিলেন।

Advertisement

কয়েক বছর আগেও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে এক রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালে চড়াও হয়েছিলেন। তার পরে হাসপাতালে গড়ে তোলা হয়েছে পুলিশ পোস্ট। রয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী, নজরদার ক্যামেরাও। তাতে যে পরিস্থিতি বদলায়নি, তা বুঝিয়ে দিয়েছে ১ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ফলে বিড়ম্বনায় পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “হাসপাতালে বন্দুকধারী পুলিশ মোতায়েনের বিষয়ে জেলা পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তা ছাড়া সিসিটিভি বাড়ানো ও নিরাপত্তাকর্মীদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। রোগী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকদের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।” তবে এত কিছুর পরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না খোদ হাসপাতালের সুপার। কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলছেন, “এ ভাবে চলতে থাকলে চিকিৎসার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। চিকিৎসকেরা এই হাসপাতালে আসতে ভয় পাবে। আমরা ইতিমধ্যেই হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছি। দেখা যাক!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন